মঙ্গলবার, ডিসেম্বর 17, 2024
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর 17, 2024
Homeপশ্চিমবঙ্গযশ দাশগুপ্তকে ‘ঢাল’ করেও লাভ হল না, ইডির ডাক পেলেন সাংসদ নুসরত...

যশ দাশগুপ্তকে ‘ঢাল’ করেও লাভ হল না, ইডির ডাক পেলেন সাংসদ নুসরত জাহান

- Advertisement -

কলকাতা – ফ্ল্যাট প্রতারণার মামলায় এবার বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে তলব করল ইডি। আগামী মঙ্গলবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। নুসরতের সঙ্গে অভিযুক্ত সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিংহকেও তলব করা হয়েছে বলে খবর ইডি সূত্রে। তাঁকেও ইডি দফতরে হাজিরা দিতে হবে মঙ্গলবার।

কিছুদিন আগে নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, ২০১৪-’১৫ সালে ৪০০-র বেশি প্রবীণ নাগরিকদের দেওয়া টাকা তিনি তছরূপ করেছেন। এই প্রবীণ নাগরিকরা ফ্ল্যাটের জন্য একটি সংস্থায় তাঁদের অগ্রিম টাকা জমা দেন। প্রবীণদের দাবি, প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। বদলে তাঁদের কলকাতার রাজারহাট-সল্টলেক এলাকায় এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদন কেটে যাওয়ার পরেও তাঁরা না পেয়েছেন কোনও ফ্ল্যাট, না ফেরত পেয়েছেন টাকা।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে ওই সংস্থার ‘অন্যতম ডিরেক্টর’ বলে দাবি করে প্রবীণদের সঙ্গে নিয়ে ইডির দরজায় কড়া নাড়েন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। শঙ্কুদেবের অভিযোগ, এ বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। নুসরতের বিরুদ্ধে আদালতেও মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, আদালতের শমন পেয়েও হাজিরা দেননি সাংসদ তথা অভিনেত্রী। তাই শেষে প্রতারিতদের নিয়ে ইডি দফতরে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসেন শঙ্কুদেব।

শঙ্কুদেবের পর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও এনিয়ে মাঠে নামতে দেখা যায়। তিনি এ-ও দাবি করেন, ‘প্রতারণার’ টাকা দিয়ে পাম অ্যাভিনিউতে নুসরত ফ্ল্যাট কিনেছেন। আর তারপরই এনিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। শেষে বাধ্য হয়ে নুসরত জাহানকে সাংবাদিক বৈঠক করতে হয়।

মিনিট কুড়ির সাংবাদিক বৈঠক করে নুসরত যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেন। নুসরত দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেই ঋণ সুদ-সহ ফিরিয়েও দিয়েছেন। ওই সংস্থার সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগাযোগ নেই। তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেন নুসরত। কিন্তু একজন ডিরেক্টর কী করে নিজের সংস্থারই টাকা ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে পারে এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কিন্তু এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়েই সাংবাদিক বৈঠক শেষ করেন নুসরত।

এরপর সংস্থারই অপর ডিরেক্টর রাকেশ সিংহ মিডিয়ায় বলেন, নুসরত জাহানকে সংস্থার তরফে কোনও ঋণই দেওয়া হয়নি। নুসরত অন্য কোথাও থেকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য টাকা জোগাড় করেছেন। রাকেশ সিংহর এমন দাবির পরই ফ্যাঁসাদে পড়ে যান নুসরত। নতুন দামি ফ্ল্যাট কেনার টাকা সত্যিই নুসরত কোথা থেকে পেলেন এনিয়ে শুরু হয় জল্পনা। কিন্তু সেই জল্পনায় জল পড়ে যখন একটি নাইট পার্টিতে নুসরত অভিনেতা যশ দাশগুপ্তর পাশে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, তাঁকে ইডি কখনও ডাকবে না।

মিডিয়ায় ব্যাপারটা অনেকটাই ধামাচাপা পড়ে যায়। অনেকেই যুক্তি দিতে শুরু করেন, যশ দাশগুপ্তর সঙ্গে যেহেতু বিজেপির ‘যোগাযোগ’ রয়েছে সুতরাং নুসরত তাই হয়তো ‘ইডির রক্ষাকবচ’ পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ইডির আচমকাই এমন তলবে নিন্দুকদের সেই যুক্তি খারিজ হয়ে গেল। নুসরতেরও ইডিকে নিয়ে করা ভবিষ্যৎবাণী ভুল প্রমাণিত গেল।

প্রসঙ্গত, বাংলায় বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতির মামলায় ইডি যথেষ্ট সক্রিয়। নিয়োগ মামলার একটি সূত্র ধরে শাসকদলের আর এক অভিনেত্রী সদস্য তথা যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষকেও কিছু দিন আগে তারা তলব করেছিল। এখন নুসরত নির্দিষ্ট দিনে ইডি দফতরে হাজিরা দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

আরও খবর
- Advertisment -

সবাই যা পড়ছেন

পছন্দের খবর