কলকাতা: তাঁর ‘কান্ডে’র জেরে গত মাস কয়েক ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। বিরোধীদের কথায়, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই বৃহস্পতিবার বলতে শোনা গেলে, ‘‘সবাই ভালো থাকুন।’’ কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিজের লাগাতার চাপ বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবারও আলিপুরের আদালত আরও ১৪ দিন তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়েছে। সেই আদেশের পর আদালত চত্বর থেকে তাঁকে জেলে নিয়ে যাওয়ার পথেই শোনা গেল, পার্থ স্পষ্ট উচ্চারণে কিন্তু নির্বিকার মুখে ভাল থাকার কথা বলছেন।
বৃহস্পতিবার তখন অন্ধকার নেমেছে আলিপুরের জেলা ও দেওয়ানি দায়রা আদালত চত্বরে। পুলিশি ঘেরাটোপে ধীর পদক্ষেপে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় পার্থকে। পরনে হালকা সবুজ কুর্তা। উপরে হাতাহীন ধূসর জ্যাকেট। অপেক্ষারত সাংবাদিকদের সামনে আসতেই ছুটে আসে একের পর এক প্রশ্ন। যেমন প্রতি বার আসে। অর্পিতার ফ্ল্যাটে পাওয়া টাকা, দুর্নীতির মূলে কে ইত্যাদি। তবে বৃহস্পতিবার এর সঙ্গে জুড়েছিল আর দু’টি প্রসঙ্গ। রাজ্য সরকারের ডিএ বাড়ানোর খবরও দেওয়া হয় পার্থকে। এ-ও বলা হয়, অর্পিতা বলেছেন, সব টাকা পার্থের। একের পর এক খবর শুনে থমকে এক মুহূর্ত দাঁড়িয়েও যান পার্থ।
যদিও অন্যান্য দিন এই সমস্ত প্রশ্ন শুনে মুখ বুজেই গাড়িতে উঠে যান রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তা হয়নি। গাড়ির দরজাটা খুলে পাদানিতে পা-ও রেখেছিলেন। হঠাৎই দাঁড়িয়ে মুখ ফেরান পার্থ। নির্বিকার মুখে উচ্চারণ করেন ঠিক চারটি শব্দ, ‘‘আপনারা সবাই ভাল থাকুন।’’ এর আগেও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন পার্থ। কখনও বলেছেন, ‘‘আসল দুর্নীতি কে করেছে তা প্রকাশ্যে আসবে।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের কোনও ক্ষতি কেউ করতে পারবে না।’’ ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন বহু বার। তবে শুভকামনা এই প্রথম জানালেন পার্থ।
আদালত সূত্রে খবর, নিয়োগ মামলায় দেরি নিয়ে বৃহস্পতিবার সিবিআইকে প্রশ্ন করেন বিচারক। অভিযুক্তদের অধিকার নিয়েও সওয়াল করেন তিনি। সিবিআইকে বলেন, কত দিন সময় লাগবে। তবে তার পরেও ২ মার্চ পর্যন্ত পার্থ-সহ অন্য অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি। এমনকি, পার্থের আইনজীবী মামলা দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ করলেও লাভ হয়নি।