Homeপাঁচফোড়নBangladesh ePassport 2023: বাংলাদেশের ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট কি

Bangladesh ePassport 2023: বাংলাদেশের ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট কি

- Advertisement -

পাসপোর্টের আধুনিক রূপ হল ই-পাসপোর্ট (ePassport)। দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশই প্রথম যে দেশ ই-পাসপোর্ট (Bangladesh ePassport 2023) চালু করেছিল। অন্য কোনও দেশে ভ্রমণ কিংবা কাজের জন্য যেতে হলে যে পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয় তারই নাম পাসপোর্ট। বাংলাদেশ সরকার ৩ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে। এর মধ্যে একটি লাল মলাট যা কূটনৈতিক পাসপোর্ট; নীল মলাট যা দাপ্তরিক পাসপোর্ট; এবং সবুজ মলাট যা নিয়মিত বা সাধারণ মানুষের জন্য পাসপোর্ট। কূটনৈতিক পাসপোর্ট কেবল বাংলাদেশের কূটনীতিকদের দেওয়া হয়। সরকারী পাসপোর্ট কেবলমাত্র বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী, সরকারী কর্মকর্তা এবং দূতদের দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য নাগরিকদের নিয়মিত বা সাধারণ পাসপোর্ট দেওয়া হয়।

ই-পাসপোর্ট (ePassport) কী দিয়ে তৈরি করা হয়

সব পাসপোর্ট পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়ে তৈরি। পাসপোর্টের মলাট টিয়ার প্রুফ টেক্সটাইল উপাদান দিয়ে তৈরি যা রাসায়নিক, ঘাম, স্যাঁতসেঁতে এবং তাপ প্রতিরোধী। এটি পাসপোর্টের সমস্ত ফাঁকা ভিসা পৃষ্ঠার সাথে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক চিহ্ন এবং বভবনের চিত্র। পাশাপাশি জনপ্রিয় বাংলাদেশী পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য তাদের নাম বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ক্ষেত্রেই নকশা করা হয়। পাসপোর্টের পৃষ্ঠা নম্বর দ্বিভাষিক – বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ক্ষেত্রেই লেখা হয়।

ই-পাসপোর্ট (ePassport) কবে চালু হয়েছিল

২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার ই-পাসপোর্ট ইস্যু করার জন্য তার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। যার কারণে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করেছিলেন যে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য অভিবাসন, ভ্রমণ এবং ভিসা পদ্ধতি সহজ হবে। নতুন বাংলাদেশী ই-পাসপোর্ট প্রবেশের সমস্ত বড় বন্দরগুলিতে পঞ্চাশটি ই-গেটের সাথে একটি জার্মান কোম্পানির সহযোগিতায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

সাধারণ পাসপোর্ট (Machine-readable passport বা MRP) ও ই-পাসপোর্ট এর পার্থক্য কোথায়

ই-পাসপোর্ট বাইরে থেকে দেখতে বাংলাদেশের প্রচলিত পাসপোর্টের মতোই দেখতে। পার্থক্যটা আসলে ভেতরে। যেমন সাধারণ পাসপোর্টের প্রথম দুই পাতায় যে তথ্যগুলি থাকে, এই নতুন ই-পাসপোর্টে সেই তথ্য থাকবে না। এর পরিবর্তে সেখানে একটা কার্ড ও একটা এন্টেনা থাকবে। এই কার্ডের ভেতরে থাকবে একটা চিপস। এখানে পাসপোর্ট বাহকের সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা থাকবে।

ই-পাসপোর্টে (ePassport) কি কি তথ্য সংরক্ষিত থাকে

  • পাসপোর্টধারীর নাম
  • পাসপোর্ট নম্বর
  • জন্মতারিখ
  • তিন ধরনের ছবি
  • দশ আঙ্গুলের ছাপ
  • চোখের আইরিশ

এর মাধ্যমে যে কোন দেশের অভিভাষণ কতৃপক্ষ খুব সহজে ভ্রমণকারী  সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে বা যাচাই করতে পারবেন। সেই সঙ্গে মেসিন  রিডেবল অপশন ও থাকবে। ফলে ই-গেট না থাকলেও পাসপোর্টধারীর পক্ষে যাতায়াতের কোনও সমষ্যা হবে না। ইমিগ্রেসন কর্তারা সেটিকে স্ক্যান করে  কেন্দ্রীয় সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করতে বা পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল কাজ করতে পারবেন।

-পাসপোর্টধারী ভ্রমণকারীরা কি কি সুবিধা পাবেন  

বাংলাদেশের ইনিশিয়াল ইমিগ্রেশনদের মতে ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, দ্রুত এবং অল্প সময়ে ই-গেট দিয়ে ভ্রমণকারীরা দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারবেন। অর্থাৎ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার তিক্ত অভিজ্ঞতার দিন আর নেই।

ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও আছে।

সব ঠিক থাকলে ই-পাসপোর্টধারী ব্যাক্তি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে চলে যেতে পারবেন খুব সহজেই। তবে গরমিল থাকলে জ্বলে উঠবে লালবাতি। সেক্ষেত্রে সেখানকার ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত অফিসাররা অবিলম্বে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবেন।

ই-পাসপোর্ট (ePassport) কত ধরনের, কি কি

দুই ধরনের। একটি আটচল্লিশ পাতার আর অপরটি চৌষট্টি পাতার।

সাধারণ, জরুরী এবং অতি-জরুরী এই তিন ধরনের পাসপোর্টের জন্য তিন ধরনের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

দুই দিনের মধ্যেও আপনি আপনারা পাসপোর্ট পেতে পারেন। তার জন্য আপনাকে একটু বেশী ফি দিতে হবে।

ই-পাসপোর্ট (ePassport) করতে কত টাকা ফি দিতে হবে

পাঁচ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট পাবার জন্য নিম্নলিখিত খরচ দিতে হয় –

e-Passport with 48 pages and 5 years validity

  • সাধারণ ডেলিভারি (Regular delivery) ৪,০২৫ টাকা (TK 4,025)
  • জরুরী ডেলিভারি (Express delivery) ৬,৩২৫ টাকা (TK 6,325)
  • অতি দ্রুত ডেলিভারি (Super Express delivery) ৮,৬২৫ টাকা (TK 8,625)

 

দশ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট পাবার জন্য 

e-Passport with 48 pages and 10 years validity

  • সাধারণ ডেলিভারি (Regular delivery) ৫,৭৫০ টাকা (TK 5,750)
  • জরুরী ডেলিভারী (Express delivery) ৮,০৫০ টাকা (TK 8,050)
  • অতি দ্রুত ডেলিভারি (Super Express delivery) ১০,৩৫০ টাকা (TK 10,350)

 

পাঁচ বছর মেয়াদি ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট পাবার জন্য

e-Passport with 64 pages and 5 years validity

  • সাধারণ ডেলিভারি (Regular delivery) ৬,৩২৫ টাকা (TK 6,325)
  • জরুরী ডেলিভারী (Express delivery) ৮,৬২৫ টাকা (TK 8,625)
  • অতি দ্রুত ডেলিভারি (Super Express delivery) ১২,০৭৫ টাকা (TK 12,075)

 

দশ বছর মেয়াদি ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট পাবার জন্য 

e-Passport with 64 pages and 10 years validity

  • সাধারণ ডেলিভারি (Regular delivery) ৮,০৫০ টাকা (TK 8,050)
  • জরুরী ডেলিভারী (Express delivery) ১০,৩৫০ টাকা (TK 10,350)
  • অতি দ্রুত ডেলিভারি (Super Express delivery) ১৩,৮০০ টাকা (TK 13,800)

ই-পাসপোর্টের অনলাইন  প্রক্রিয়া

ওয়েবসাইট- www.dip.gov.bd এখানে আবেদন করা যাবে।

সাইটে বাংলা বা ইংরাজী ভাষা নির্বাচন করে নেবার সুবিধা আছে।

শুরুতেই দেখতে পাবেন দুটি অপশন   

অনলাইন পাসপোর্টের আবেদন। নতুন অথবা রি-ইস্যু। এই দুটি বাটনের একটিতে ক্লিক করে আপনার কাঙ্ক্ষিত পরিসেবা পাবেন।

ই-পাসপোর্ট কিভাবে আবেদন আবেদন করবেন

  • ধাপ ১- বর্তমানে বসবাসরত এলেকায় ই-পাসপোর্ত কর্যক্রম শুরু হয়েছে কি না দেখে নিতে হবে।
  • ধাপ-২ অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের ফর্ম ফিলাপ করুন।
  • ধাপ- ৩ পাসপোর্ট ফি পরিশোধ।
  • ধাপ-৪ ছবি ও ফিংগার প্রিন্টের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ।
  • ধাপ ৫- পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ

ই-পাসপোর্টের কিছু জরুরী তথ্য

ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচিয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী পুরণ করতে হবে।

১৮ বছরের কম বয়সী আবেদনকারী যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের ক্ষেত্রে পিতামাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

ই-পাসপোর্টের আবেদন পত্র অনলাইনে অথবা পিডিএফ ফর্মে ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোনোধরনের ছবি বা কাগজ স্বত্যায়িত করারা প্রয়োজন নেই।

প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্র সহ বাবা মায়ের এন আই ডি কপি বাধ্যতামূলক।

সব ধাপগুলি মেনে আবেদনপত্র জমা দেবার পর আপডেট জানতে পারবেন ই-পাসপোর্ট পোর্টেলের ‘স্ট্যাটাস চেক’ অপশনে। জন্ম তারিখ এবং আবেদনের ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে সার্চ অপশনে ক্লিক করতে হবে। আপনারা অনলাইন  পোর্টাল আবেদন থেকে আপনার সব আবেদনের অবস্থান দেখতে পারবেন।

অনলাই আবেদন সম্পন্ন হলে এস এম এস -এর মাধ্যমে আপনার প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে পরবর্তী সাক্ষাৎকারের তারিখ চলে আসবে। ওই তারিখে আপনাকে পাস পোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তুলতে হবে এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে।

এরপর আপনার ই-পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে গেলে এস এম এসের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে আপনি যেখান থেকে আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন সেইখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন আপনারই ই-পাসপোর্ট।

 

 

 

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -