কলকাতা – কলকাতা ও শহরতলির আমজনতার কাছে বিষয়টি কল্পবিজ্ঞানের মতো ঠেকতেই পারে। তবে এবার কিন্তু এটাই বাস্তব হতে চলেছে কলকাতায়। শুক্রবার এক ড্রোন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল। আর তার ফলেই এবার এই শহরেও আকাশপথেই ড্রোনে করে পৌঁছে যাবে ওষুধ, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের নমুনা এবং রিপোর্ট এমনকি রেস্তোরাঁর খাবারও।
সপ্তাহখানেক আগেই অবশ্য ট্রায়াল হয়ে গিয়েছে। একটু আধটু নয়। একেবারে হাওড়ার কদমতলা থেকে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত একটি ড্রোন পাঠায় দিল্লির সংস্থা। মালবাহী ড্রোনের বাক্সে ভরা ছিল প্যাথলজিকাল ল্যাবের সংগ্রহ করা নমুনা।
গাড়ি বা মোটরসাইকেলে সাধারণত এমন নমুনা পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে সড়কপথে দূরত্ব পড়ে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। সময় লাগে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা। সেখানে ড্রোনে সরাসরি আকাশপথে দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। স্রেফ ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেই পথ অতিক্রম করে মালবাহী ড্রোন। নির্বিঘ্নে পৌঁছে যায় নমুনা। শুধু তাই নয়। রিপোর্ট নিয়ে ফের হাওড়া কদমতলায় ফিরেও আসে। ১৫ মিনিটেই।
দিল্লির এই ড্রোন নির্মাতার নাম TSAW ড্রোনস। তাদেরই ব্যবসায়িক সাখা Droneco কলকাতায় এই পরিষেবা চালু করছে। মার্কিন মুলুকে বছরখানেক আগেই বহু শহরে ড্রোন ডেলিভারি চালু হয়ে গিয়েছে। সেখানে আমাজনের মতো সংস্থাও দ্রুত ডেলিভারি করতে ড্রোনের সাহায্য নেয়। ভারতেও কিছু শহরে সীমিতভাবে ড্রোন ডেলিভারির পরিষেবা চালু হয়েছে।
তবে ড্রোন ডেলিভারির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। ভারতে বেশিরভাগ শহরেই ড্রোন নামানোর জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন। ইলেকট্রিকের তার, গাছের ডাল, ঘন বিল্ডিং-বসতির কারণে সেটি একটি সমস্যার বিষয়। তাছাড়া বহু নো-ফ্লাইয়িং জোন রয়েছে। ড্রোন নিয়ে নিয়মেও কড়াকড়ি রয়েছে।
আপাতত কলকাতায় ৬০ মিটার এবং হাওড়ায় ১২০ মিটার উচ্চতায় ড্রোন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে এটিসি। শুধুমাত্র ড্রোন পরিষেবা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আলাদা সেল তৈরি করা হয়েছে কলকাতায় বিমানবন্দরে। ড্রোন ওড়ানোর সময় আগে থেকে তাদের জানাতে হবে। বিমান চলাচলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাঁরা সময় ও রুট স্থির করে দেবেন।
তবে ফোর্ট উইলিয়াম, নবান্নের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে নো ফ্লাইয়িং জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১৫টি কেন্দ্র থেকে ১৪টি রুটে ড্রোন পরিচালনা করা হবে। এর মাধ্যমে কলকাতা ও হাওড়ার ১৪টি স্থানে ড্রোনে ওষুধ, ল্যাব নমুনা ও রিপোর্ট ও খাবার ডেলিভারি করা হবে।