নয়া দিল্লি: দায়ে পড়ে ‘মোদীমন্ত্র’কে কাজে লাগাতে চাইছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ (Pak PM Shehbaj Sharif)। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) তাঁর সরকারের মন্ত্রীদের ভিভিআইপি লাইফস্টাইল নিয়ে নানা বিধি নিষেধ জারি করেছিলেন। তারপর করোনার সময় সরকারের খরচ কমাতে সাংসদ-মন্ত্রীদের কোটাতেই কোপ মেরেছিলেন। এখন পাকিস্তানের (Pakistan) আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সেই ফর্মুলাই মনে পড়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের।
পাকিস্তানের আর্থিক সঙ্কট দূর করতে নিজের মন্ত্রীদের জন্য বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি করেছেন শেহবাজ (Pak PM Shehbaj Sharif)। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে শেহবাজ মন্ত্রীদের বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা আর বিমানের বিজনেস ক্লাসে চড়তে পারবেন না। সাধারণ জনতার মতো বিমানের ইকনমি ক্লাসে চড়েই যাতায়াত করতে হবে তাঁদের। তা ছাড়া এ বার থেকে বিদেশ সফরে গেলে কোনও বিলাসবহুল হোটেলেও থাকতে পারবেন না তাঁরা। এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রীদের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মত ‘ত্যাগী’ হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন শাহবাজ।
- ‘বিষাক্ত বাতাসে’ লাহোরে এক দিনে অসুস্থ ১৫ হাজার, দূষণে পাকিস্তানে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা
- ফের বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তান, মৃত্যু অন্তত ১৬ জনের, আহত আরও অনেকে
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (Pak PM Shehbaj Sharif) বলেছেন, “এখন আমাদের সকলের ব্যয়সঙ্কোচ করা প্রয়োজন। কঠিন সময় আমাদের এই শিক্ষাই দিচ্ছে যে, আমাদের আপাতত সাদামাটা জীবনযাপন করা উচিত।’’ পাশাপাশি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের আরও কঠিন দিন আসতে চলেছে বলেও আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে এখন খাবার জল, আটা, ময়দার দামও লাগামছাড়া। সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। এই পরিস্থিতিতে কিছু দিন আগেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা শাসকদল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) নেতা খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তান ‘দেউলিয়া’ হওয়ার পথে হাঁটছে এমন নয়, ‘দেউলিয়া’ হয়ে গিয়েছে।
খাজা আসিফ জানিয়ে ছিলেন, ‘‘আমরা এক দেউলিয়া দেশের বাসিন্দা। লোকজন বলছে পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এবং সেখানে আর্থিক সঙ্কট চরমে। আসলে দেশ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। এ বার আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’’ তারপরই খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকেও একই ধরনের কথা বলতে শোনা গেল।
কিন্তু বিরোধীরা পাক প্রধানমন্ত্রীর এমন বিধি নিষেধকে লোক দেখানো বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। তাঁদের মতে, পাকিস্তান এই নয় যে হঠাৎই দেউলিয়া হওয়ার পথে চলতে শুরু করেছে। দেশের বিদেশি মুদ্রাভাণ্ডার তলানিতে ঠেকে যাওয়ার পরেও শেহবাজ শরিফের সরকারই বিদেশ থেকে কয়েক শ‘কোটি ডলারে গাড়ি আমদানির অর্ডার দিয়েছে। এমনকী, দেশের আর্থিক দুর্দশার সময়েও শেহবাজ শরিফ কিংবা বিলাবল ভুট্টোদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের বহর নিয়ে বিনা কারণে বিদেশ সফর করতে দেখা গেছে।
বিরোধীদের মতে, আসলে এখন আইএমএফের চাপ পড়তেই ত্যাগের কথা মনে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের। পাশাপাশি আধপেটা খেয়ে দিন কাটানো পাকিস্তানি পাবলিক যাতে এরপর মন্ত্রীদের ওপর হামলা না করে বসে, দেশে যাতে গৃহযুদ্ধের পরিবেশ তৈরি না হয়, সেই কারণেই এই ত্যাগের মন্ত্র আউরাতে শুরু করেছেন শেহবাজ শরিফ।
