নয়া দিল্লি: ইডি চেয়েছিল ১৪ দিনের হেফাজত। তবে ১৪ দিন নয়, মোটে ৩ দিন। আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে থাকবেন বীরভূমের ‘বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। মঙ্গলবার সারা দিনের পর গভীর রাতের ফয়সলায় এমনটাই রায় দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত।
ইডির আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, গরুপাচারের টাকা কোথায় গিয়েছে, সেই টাকার ভাগ কারা কারা পেয়েছে তা জানতে অনুব্রতকে (Anubrata Mandal) নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন। শেষমেশ বিচারক ৩ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। বিচারক জানান, আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত অনুব্রত ইডির হেফাজতে থাকবেন।
পাশাপাশি এই সময়ে তাঁকে রুটিন করে হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যেতে হবে। এবং অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রতি দিন আধ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। মঙ্গলবার রাত ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ শেষ হয় অনুব্রত মণ্ডলের মামলার শুনানি।
তবে এদিন দিল্লির বুকেও অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে গভীর রাতে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হতে দেখা যায়। রাত ৮টা ৫৪ মিনিট নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন কেস্ট। অনুব্রত দাবি করেন, তাঁর শরীর খারাপ লাগছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বলেও জানান। সঙ্গে সঙ্গে আনা হয় হুইল চেয়ার। ইডি, চিকিৎসক এবং নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে হুইল চেয়ারে করে সঙ্গে সঙ্গে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে।
সেখানে শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার পর ইডি সূত্রে জানা যায়, আর দেরি করতে চায় না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সশরীরে না হলেও ভার্চুয়ালিই তারা মঙ্গলবার রাতে অনুব্রতকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করাতে চায়। শুরু হয় প্রস্তুতি। ঠিক হয়, রাত ১১টা ২০ নাগাদ ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিচারক রাকেশ কুমারের এজলাসে শুরু হবে শুনানি।
সেই শুনানি শুরু হতেই আবার এক প্রস্ত নাটক। বিচারক রাকেশ কুমারের এজলাসে আধ ঘণ্টা শুনানি চলতে না চলতেই তা স্থগিত হয়ে যায়। সিদ্ধান্ত হয়, ইডি এবং অনুব্রত মণ্ডল— দু’পক্ষই বিচারক রাকেশ কুমারের বাড়িতে যাবে। সেখানেই হবে শুনানি। এর পর অনুব্রতকে নিয়ে ইডি দফতরের অন্য গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় গাড়ি।
কিন্তু কোথায় বিচারকের বাড়ি? শুরু হয় মহানাটক। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ‘চোরাগোপ্তা’ খেলার পর অবশেষে রাত ১টা নাগাদ অশোকবিহারে বিচারকের বাড়ি পৌঁছন অনুব্রত-সহ ইডি আধিকারিকেরা। রাত ১টার পর শুরু হয় সওয়াল।
ইডির আইনজীবী বিচারককে জানান, গরু পাচারের টাকা কোথায় গিয়েছে, তা জানার জন্য হেফাজতে নিয়ে অনুব্রতকে জেরা করা দরকার। সওয়াল জবাব শুরুর কিছু ক্ষণ পরেই অনুব্রতকে ৩ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।