কলকাতা: আদালত চত্বরেই মামলার শুনানিতে শোনা গিয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। সেই স্লোগানের জেরে উচ্চ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে তো পড়তে হলই, এমনকী ডিভিশনে বেঞ্চে ধাক্কা (High Court) খেতে হল চাকরিহারদের।
বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের (High Court) ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, স্কুলে গ্ৰুপ সি বা তৃতীয় বিভাগের কর্মী নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া যাবে না। এদিন চাকরিহারাদের আইনজীবী অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চাইলেও তা মঞ্জুর করেনি কলকাতা হাই কোর্ট।
এর ফলে গ্রুপ সির ৮৪২টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বৃহস্পতিবার থেকে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে এসএসসি (SSC). এদিন আদালতের তরফে সিবিআই ও এসএসসির তরফে একসুরে আদালতে জানানো হয়, যে ওএমআর শিটগুলির ভিত্তিতে ৮৪২ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে সেগুলিকে বিকৃত করা হয়নি। নিশ্চিত হয়েই সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার করেছে এসএসসি।
বুধবার চাকরিহারাদের মামলায় হাই কোর্টে তরজা বেশ জমে ওঠে। চাকরিহারাদের আইনজীবী সওয়ালে বলেন, ‘‘এসএসসি-র বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এর থেকে রেহাই পাওয়া উচিত নয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকেরও।’’
চাকরিহারাদের আইনজীবীর যুক্তি, ‘‘সবাই তো এদের অনুমতি নিয়েই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাই সবার ভূমিকাই খতিয়ে দেখা উচিত।’’ এর পর আইনজীবী বলেন, ‘‘তার পর খেলা হবে।’’ যদিও ওই শব্দবন্ধ প্রত্যাহার করে নিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।
এরপরেই আসরে নামেন চাকরিহারাদের আর এক আইনজীবী। তিনিও আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, ‘‘নাইসা থেকে উদ্ধার করা উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট দিয়েই এত কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কিন্তু নাইসার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।’’ আদালতে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ওএমআর শিট যে বিকৃত করা হয়নি, এর নিশ্চয়তা কোথায়?’’
কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবীর জবাবে চাকরিহারাদের দুই আইনজীবীর যুক্তি হাওয়ায় উড়ে যায়। সিবিআইয়ের আইনজীবী স্পষ্ট বলেন, ‘‘উদ্ধার করা ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছে এমন ধারণা না হওয়াই উচিত। এটা শুধুমাত্র স্ক্যান কপি নয়। এর একটা জটিল প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। ওএমআর কোনও সাধারণ কাগজের টুকরো নয়। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ প্রযুক্তি রয়েছে। এর সঙ্গে একটা আনসার স্ট্রিং থাকে। যারা দ্বারা এর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়। ওএমএর এসএসসির অফিসে স্ক্যানও করা হয়।’’
এরপরই কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরিহারাদের আইনজীবীর করা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে দেয়।