কলকাতা: সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই পরিস্থিতিতে ফের ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। আর সেজন্য খরচ হতে পারে ২৫০ কোটি টাকা। নবান্ন সূত্রে খবর এমনটাই। কিন্তু এমন খরচকে খুব একটা ‘পাত্তা’ দিতে রাজি নন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
তাঁর বক্তব্য, “দুয়ারে সরকারে (Duare Sarkar) খরচ তেমন কিছু হয় না। কারণ বেশিরভাগ দিনই আমরা স্কুলে বা ছুটির দিনে যখন স্কুল বন্ধ থাকে বা ক্লাব অথবা কোনও সামাজিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সকালে কোন কাজকর্ম থাকে না, সেই জায়গাগুলো বেছে নিয়ে কাজকর্ম করে থাকি। আর একটু টেবিল চেয়ার পেতে নিই। আমাদের আধিকারিকরা রয়েছেন সেই কাজের জন্য। খুব যে টাকা পয়সা খরচ হয় তা নয়। স্থানীয় ছেলেরাই যাবতীয় কাজকর্ম করে থাকে।”
তাহলে প্রশ্ন উঠছে এতটাকা খরচ হচ্ছে কী করে? জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরই একাংশ জানাচ্ছেন, দুয়ারে সরকারের (Duare Sarkar) শিবিরে প্যান্ডেল করা, টেবিল-চেয়ারের ভাড়া, শিবির চালাতে লোক, তাঁদের সকাল দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা, প্রচারের একটা খরচ সব মিলিয়ে অঙ্কটা বেশ ভালই। লক্ষ লক্ষ তথ্য নথিবদ্ধ করার জন্য টাকা দিতে হয় ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের। জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, প্রতিটি বড় শিবিরে গড়পড়তা ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েই যায়।
যদিও ফিরহাদের দাবি, রাজ্যের যেখানে যেখানে এই কর্মসূচি বা ক্যাম্প হয় সেখানে স্থানীয়দের সেই কারণেই যুক্ত করা হয়। সামান্য টিফিনের ব্যবস্থা থাকে। তার জন্য খুব একটা খরচ হয় না। তাহলে এত কথা কেন বলছেন বিরোধীরা? এই ‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে আবার ভবিষ্যতে কোনও কেলেঙ্কারি বেরোবে না তো? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তো এরইমধ্যে দাবি করে বসেন আছেন, ‘সবেতেই দুর্নীতি হয়েছে বা হচ্ছে।’ তাহলে?
পালটা ফিরহাদের কটাক্ষ, “আমাদের স্কিমগুলো নিয়ে বিরোধীরা বড়ই চিন্তিত এবং ভীত হয়ে রয়েছে। দুয়ারে সরকার হলে মানুষের ঘরে ঘরে পরিষেবা পৌঁছে যাবে বা গিয়েছে। সেটা নিয়েই চিন্তিত বিরোধীরা। এত অপপ্রচার সত্ত্বেও মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। অন্যদিকে বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এটাই সমস্যা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারে নবান্নের তরফ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলে দেওয়া হয়েছে, বুথ স্তরে করতে হবে দুয়ারে সরকারের শিবির। গত ১ নভেম্বর রাজ্যে পঞ্চম দফার দুয়ারে সরকার শুরু হয়েছিল। দু’দফায় মেয়াদ বেড়ে তা চলে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছিল। এবার ১ এপ্রিল থেকে দু’দফায় হবে শিবির। প্রথম দফায় নেওয়া হবে আবেদনপত্র, দ্বিতীয় দফায় চলবে শংসাপত্র দেওয়া এবং সংশোধনের কাজ।