পুরী: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বুধবার পুজো দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Puri Mamata)। কিন্তু তিনি কী প্রার্থনা করলেন জানেন? মমতা নিজেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষের জন্য পুজো দিয়েছি। আমি চাই সকলে ভাল থাক। সুখে থাক। জীবনে আনন্দ আসুক।’’
আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, ‘মা-মাটি-মানুষ’ বলতে কাকে বোঝাতে চাইলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী? তাঁর নিজের দল তৃণমূল নয় তো? কেননা, তৃণমূল বলতে এক সময় এই ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর কথায় বলা হতো। একইসঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থনা করেছেন – সকলেই ভাল থাক। সুখে থাক। জীবনে আনন্দ আসুক। কার জীবনে এখন নিরানন্দ চলছে?
সমালোচকদের কথায়, পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে বাংলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Puri Mamata) সরকারি খরচে পুরী গিয়ে জগন্নাথ দর্শন করে তাঁর নিজের দল আর দলের নেতাদের সুখ-আনন্দের প্রার্থনা জানিয়েছেন। সমালোচকদের মতে, এটাই স্বাভাবিক। এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে যা চলছে, নানান দুর্নীতিতে যেভাবে একের পর এক তৃণমূল নেতা জেলে ঢুকছেন – তাতে দলনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জগন্নাথ মন্দিরে এমন প্রার্থনায় স্বাভাবিক।
একইসঙ্গে বিজেপির নেতারাও বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী আসলে সরকারি খরচে পুরী ঘুরতে যাচ্ছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের বাড়ি থেকে একের পর এক যা বেরোচ্ছে তাতে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর কোনও উপায় নেই। সুতরাং ‘পালিয়ে গিয়ে’ জগন্নাথ মন্দিরের কাছে তিনি ‘মা-মাটি-মানুষে’রই তো আনন্দ ফিরিয়ে আনার প্রার্থনা করবেন। সেটাই তিনি করেছেন।
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এদিন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে (Puri Mamata) যেভাবে সেবায়েতরা সম্মান জানিয়েছেন, তা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। এর আগে একবার এই পুরীর মন্দিরেই মমতাকে নিয়ে সেবায়েতরা প্রতিবাদ করে বসেছিল। এবার যেন তার উলটো ছবিই জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতদের মধ্যে দেখা গিয়েছে।
এদিন পুজো দেওয়ার পর মমতা গোটা মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন। খোশমেজাজে আড্ডা জমান সেবায়েত, কর্মীদের সঙ্গে। পুজো দিয়ে বেরিয়ে আসতেই মমতাকে ঘিরে ধরে সংবাদমাধ্যম। মাইক হাতে তুলে নেন মমতা। তার আগে তাঁকে পরানো হয়েছে পুরীর মন্দিরের ঐতিহ্যবাহী উত্তরীয়।
মমতা বলেন, পাশাপাশি পুরীর মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ যে ধ্বজ, সেই পতাকা তোলাও নিজের চোখে দেখেছেন তিনি। মমতা জানান, পুরনো ধ্বজটি তাঁকে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। আর তাঁর নিয়ে যাওয়া ধ্বজটি তোলা হয়েছে মন্দিরের মাথায়। এ জন্য তিনি মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
পাশাপাশি এদিন নিউ পুরী এলাকায় ‘বাংলা নিবাস’ তৈরির জন্য নির্ধারিত জায়গা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর পৌঁছন পুরীর মন্দিরে। সেখানে ঘণ্টাখানেক ছিলেন মমতা।