নয়াদিল্লি – আমেরিকায় ‘পরিবর্তন’ আসতেই ভারতের বিরুদ্ধে সুর নরম করে ফেললেন কানাডার প্রধামন্ত্রী জাস্টিন ট্রু়ডো। দিন কয়েক আগেও যিনি ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে হুঙ্কার ছাড়তে শুরু করেছিলেন, সেই ট্রুডোই এখন মেউমেউ করতে শুরু করলেন। সোমবার সে দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘‘খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কানাডায় শিখদের প্রতিনিধিত্ব করেন না।’’
অথচ, গত ১ বছর ধরে এই কথাটাই ট্রুডোকে দিয়ে বলাতে পারছিল না ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার। বারবার উলটে ফোঁস করছিল কানাডার জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। কিন্তু আমেরিকায় রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটে জিততেই ট্রুডো একেবারে বাঘ থেকে বিড়াল হয়ে গেলেন।
এর আগে কানাডার মাটিতে খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে হত্যার অভিযোগ সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারকে নিশানা করেছিল ট্রুডো সরকার। এরই মধ্যে কানাডা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার টরন্টোর ভারতীয় দূতাবাস যাবতীয় সামাজিক কর্মসূচি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাতিল করে দেয়।
পালটা ট্রুডো মন্ত্রিসভার সদস্য ডেভিড মরিসন গত ৩০ অক্টোবর পার্লামেন্টের সংশ্লিষ্ট কমিটিকে জানিয়েছিলেন, মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের নির্দেশে কানাডায় খলিস্তানিদের উপর হামলা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটছে।
এরপর কানাডার ব্র্যাম্পটনে একটি হিন্দু মন্দিরে খলিস্তানি চরমপন্থীদের হামলার পর বুধবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার পরেই কানাডা পার্লামেন্টে আয়োজিত দীপাবলি এবং শিখেদের ‘বন্দি ছোড়’ উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেন তিনি।
আসলে আন্তর্জাতিক কূটনীতির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঠ্যালায় পড়েই বিড়াল গাছে উঠেছে। কেননা, ট্রুডো বেশ বুঝতে পেরেছেন আমেরিকার সমর্থন নিয়ে যে রোয়াবে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে চেয়েছিলেন – সেটা আর সম্ভব নয়। আমেরিকায় পালা বদল ঘটে গিয়েছে। ট্রাম্প জয়ী হওয়ার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ার আশা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর ‘ব্যক্তিগত’ স্বার্থের জন্য আমেরিকা ভারতের ‘বন্ধুত্ব’কে জলাঞ্জলি দেবে না। তাই ট্রুডোর এই ইউটার্ন।