রায়পুর – অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিনে বড় ঘোষণা করল ছত্তিসগঢ়ের নতুন বিজেপি সরকার। রামায়ণ অনুযায়ী রামের ‘দিদার বাড়ি’ ছত্তীসগঢ়। তাই এই রাজ্যের সরকার জানিয়েছে, দূরে থাকলেও ‘নাতি’র প্রাণপ্রতিষ্ঠার শুভ দিনে ‘ব্রত’ পালন করবে তারা।
সদ্য সরকার বদলেছে ছত্তীসগঢ়ের। কংগ্রেস সরকারকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন বিষ্ণু দেও সাই। তিনিই ঘোষণা করেছেন রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন তাঁদের বিশেষ ব্রত পালনের কথা।
রামের মামার বাড়ি ছত্তিসগঢ়
ছত্তিসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করি যে, এই ছত্তীসগঢ়ে রামের ‘মামার বাড়ি’। বা বলা ভাল দিদা-দাদুর বাড়ি। ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠান ঘিরে ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানের দিনও বেশ কিছু পরিকল্পনা থাকবে।’’
বিষ্ণুর কথায়, ‘‘আমার রাজ্যের সুশাসনের মডেলই হল রাম-রাজ্য। রামের প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে এ ভাবে জড়িয়ে থাকতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি।’’
সেই পরিকল্পনা কী কী?
মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের দিন দীপাবলির মতো আলোর মালায় সাজবে গোটা রাজ্য। বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করা হবে অনুষ্ঠান। রামের মা, অযোধ্যার রাজা দশরাথের পাটরানি কৌশল্যার নামে মন্দির রয়েছে এ রাজ্যে সেখানেও হবে বিশেষ পুজো।
তবে এ সবের পাশাপাশি শিশু রামের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনে রামের ‘মামারবাড়ি’র রাজ্যে মদ না ছোঁয়ার ব্রত পালন করবে। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার ঠিক করেছে ২২ জানুয়ারি গোটা রাজ্যে মদ কেনাবেচা যাবে না। ওই দিনটিকে ‘ড্রাই ডে’ হিসাবে পালন করবে ছত্তীসগঢ়ের সরকার।
রামায়ণে কী রয়েছে
রাম পুরাণে বলা আছে দক্ষিণ কোশলের রাজা সুকৌশল এবং রানি অমৃতপ্রভার কন্যা হলেন রামের মা কৌশল্যা। আর এই দক্ষিণ কোশলের সীমা ছিল এখনকার ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশের এবং ওড়িশার কিছু অংশ জুড়ে। এর মধ্যে দক্ষিণ কোশলের রাজধানী রতনপুর এখন ছত্তীসগঢ়ে বিলাসপুরে।
কৌশল্যার নামে মাতা কৌশল্যা মন্দির রয়েছে পাশের জেলা রায়পুরে। আবার পুরাণে এ-ও বলা আছে যে, অযোধ্যার ছেড়ে ১৪ বছরের বনবাস কালে রাম-সীতা এবং লক্ষ্মণ বহু বার ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে ঠিক কী হবে
এই সমস্ত কাহিনিকে মনে করেই রামমন্দিরে শিশু রামের প্রাণপ্রতিষ্ঠা দিবসে উৎসব পালন এবং ব্রতপালনের শপথ নিয়েছে ছত্তীসগঢ়। মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু জানিয়েছেন, অযোধ্যার অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য চাল, ডাল, শাকসব্জিও যাচ্ছে রামের মামারবাড়ি থেকেই।
এরইমধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন সুগন্ধী চাল ছত্তীসগঢ় থেকে পাঠানো হয়েছে অযোধ্যায়। সব্জি কৃষকেরাও অযোধ্যা যাবেন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সব্জি দিয়ে আসতে।