কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দিন কয়েক ধরেই পালটা আক্রমণে নেমেছে তৃণমূল। নিয়োগ দুর্নীতির বীজবপন যে বাম সরকারের আমলেই – সে নিয়ে নানা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন তৃণমূলের নেতারা। এবার সেই সুরেই কথা বলতে শোনা গেল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee)।
বৃহস্পতিবার তিনি আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ঢোকার মুখে জানালেন, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষদের হাত ধরেই নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) দাবি, সুজন-শুভেন্দুদের হাত ধরেই দুর্নীতি হয়েছিল।
এখানেই থেমে না থেকে ২০১১-১২ সালে প্রাথমিক নিয়োগে কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখার কথাও বলেন তিনি। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এদিন নিজেকে ফের ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ হিসেবে দাবি করে বলেন, কোনও বেআইনি কাজ তাঁর পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। যা করেছে এই সুজন, শুভেন্দু ও দিলীপ ঘোষেরাই করেছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন, উত্তরবঙ্গে কী করেছেন! তাঁরা সমস্ত জায়গায় চাকরির জন্য তদ্বির করেছেন। আমি বলেছিলাম করতে পারব না। সাহায্য় করিনি আমি। বেআইনি কাজ করব না বলেছিলাম।’’
কিন্তু এদিন নিজেকে আরও একবার ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ বলে দাবি করলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লক-আপে ঢোকানোর সময় ফের ‘চোর চোর’ স্লোগান শুনতে হয়েছে। আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পার্থর ঢোকার সময় চলে লাগাতার ‘চোর চোর’ স্লোগান।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এমন বক্তব্য কেউ কি এখন বিশ্বাস করবে? সত্যিই যদি নিয়োগ দুর্নীতিতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ কিংবা শুভেন্দু অধিকারীরা জড়িত থাকেন, তাহলে এতদিন তিনি সেটা বলেন নি কেন? তৃণমূল ধুয়ো তোলার পর কেনই বা তাঁকে এতদিন পর মিডিয়ায় এমন দাবি করতে হচ্ছে?
রাজনীতির কারবারিদের মতে, আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেকে এখনও তৃণমূলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হয় টিভিতে নয়তো খবরের কাগজে তিনি তৃণমূল নেতাদের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক বক্তব্য জেনে থাকবেন। আর তারপরই নিজের সুর পালটে রাজ্য রাজনীতিতে একটা বিস্ফোরক মন্তব্য করার চেষ্টা করেছেন।