ভোপাল – ‘‘হনুমানজী, সাতদিনের মধ্যে সরে যান। নয়তো রেলের তরফে আপনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকী, ইট-বালি-পাথর ও জেসিবির খরচও আপনার কাছ থেকে নেওয়া হবে।’’ মধ্যপ্রদেশের মোরেনাতে বজরংবলীর মন্দির সরাতে এমনই নোটিশ জারি করেছে ভারতীয় রেল। যা রীতিমতো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বজরংবলীকে দেওয়া নোটিশ ইন্টারনেট মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। ভারতীয় রেলকে ট্রোলড করা হচ্ছে।লোকে বলছে, বজরংবলীর বদলে মন্দির ব্যবস্থাপনার নামে এই নোটিশ দেওয়া যেত। এভাবে সরাসরি ভগবানকে নোটিশ পাঠানো মানে শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে আঘাত করা।
রেলের জমি থেকে বজরংবলীর মন্দির সরাতে এধরনের নোটিশ পাঠানোর ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। বজরংবলীকে উদ্দেশ্য করে ওই নোটিশে লেখা হয়েছে, ‘‘আপনি সবলগড়ের মাঝামাঝি কিলোমিটারে একটি বাড়ি (মন্দির) তৈরি করে রেলের জমি দখল করেছেন। তাই এই নোটিশের সাত দিনের মধ্যে রেলওয়ের জমিতে করা দখল অপসারণ করে রেলওয়ের জমি খালি করুন, অন্যথায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপনার করা দখল অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যার ক্ষতি এবং খরচ আপনার (ভগবান বজরং বালির) নিজের দায়িত্ব।’’
ভারতীয় রেল এখানেই থেমে থাকেনি। নিয়ম মেনে এই বজরংবলীকে দেওয়া এই নোটিশের একটি অনুলিপি সহকারী ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার গোয়ালিয়র এবং জিআরপি স্টেশন ইনচার্জ গোয়ালিয়রের কাছেও পাঠানো হয়। যদিও এনিয়ে যথেষ্ট হৈ হট্টগোল করেন। পরে রেলকর্মীরা হট্টগোলের পর নোটিশ সরাতে গেলে লোকজন প্রতিবাদ জানাতে থাকে। পরে রেলকর্মীরা ফিরে এসে বজরংবলী মন্দিরের পুরোহিতের নামে দ্বিতীয় নোটিশ জারি করেছে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু ব্যাপারটি ঠিক কী?
সূত্রের খবর, গোয়ালিয়র-শেওপুর ব্রডগেজ লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। সেই লাইন যেখান দিয়ে যাচ্ছে সেখানেই রয়েছে বজরংবলীর মন্দির। এদিকে সেখানে মন্দিরটি থাকায় রেললাইনের কাজে সমস্যা হচ্ছিল। রেলের জায়গার উপরেই মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তার জেরেই এবার মন্দিরটি সরিয়ে দেওয়ার জন্য় নির্দেশ।
কেন এমন আজব নোটিশ ইস্যু করা হল?
রেলের আধিকারিকদের একাংশের মতে, এর মধ্য়ে অস্বাভাবিক কিছু নেই। রেলের জায়গার উপর কিছু তৈরি করা হলে সেখানে নোটিশ পাঠানো হয়। এটা একেবারে স্বাভাবিক বিষয়। তবে হনুমানজীকে কেন এই চিঠি লেখা হল সেই প্রসঙ্গে ঝাঁসি রেল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক মনোজ মাথুর জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
তবে এই নোটিশ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। তবে রেলের নোটিশ পাওয়ার পরে হনুমানজী শেষ পর্যন্ত সাড়া দিয়েছিলেন কি না সেটা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সোশ্য়াল মিডিয়ায় এই নোটিশের কপি ইতিমধ্যেই ঘুরছে।