ওয়াশিংটন – সময় যত এগোচ্ছে, বাড়ছে আশঙ্কাও। দীর্ঘ দিন মহাকাশে আটকে আছেন। যার জেরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচের। সম্প্রতি নাসার পক্ষ থেকে সুনীতার যে ক’টি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে সুনীতার জন্য উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্ববাসীর।
পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে আইএসএসে রয়েছেন সুনীতারা। সেখানে বসেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি। সেই বন্দোবস্ত করেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা।
কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সুনীতার যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোচরের স্বাস্থ্যের অবনতি লক্ষ করার মতো। এই পাঁচ মাসে তাঁর ওজন এতটাই কমেছে যে সুনীতাকে অত্যন্ত শীর্ণকায় লাগছে। দীর্ঘায়িত মহাকাশ সফরের কারণে এই শারীরিক অবনতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে নাসারও।
এই অভিযানের সঙ্গে নাসার যে সব কর্তারা ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত তাঁরাও সুনীতার শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে চিন্তিত বলে জানা গিয়েছে। তাঁর ওজন দ্রুত স্থিতিশীল করা দরকার এবং এই মুহূর্তে সুনীতাদের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন নাসার এক কর্তা। কেননা, তিনিও এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন।
যদিও নাসা বার বার দাবি করছে, সুনীতা এবং ব্যারির প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা নেই। সুনীতার স্বাস্থ্যের উপর কড়া নজর রাখছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। নাসা জানিয়েছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সুনীতাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে।
নতুন করে একটি মহাকাশযান পাঠানো হবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (আইএসএস)। তত দিন সুনীতারা সেখানেই থাকবেন। ফেব্রুয়ারিতে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের ‘ক্রু ড্রাগন’ মহাকাশযানের মাধ্যমে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে।
নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি দিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন সুনীতা ও বুচ। তাঁদের ওজন যাতে না কমে যায় তার জন্য পুষ্টিকর খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিজের শারীরিক সমস্যা নিয়েই অবশ্য মোটেই চিন্তিত নন সুনীতা। কিছু দিন আগে মহাকাশ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুনীতারা। সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর তাঁরা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, মহাকাশই তাঁদের ঘর। সেখানে থাকতে তাঁদের ভালই লাগছে।
উল্লেখ্য, ৫ জুন ফ্লরিডা থেকে সুনীতাদের নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল বোয়িং স্টারলাইনার। গন্তব্য ছিল মহাকাশে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। সেই সময় সুনীতার ওজন ছিল ৬৩ কেজি। মূলত আট দিনের নির্ধারিত মহাকাশ সফরের পরিধি বেড়ে পাঁচ মাসে দাঁড়িয়েছে বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে।
মহাকাশে ওজন স্থিতিশীল রাখতে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয় মহাকাশচারীদের। শুধুমাত্র ওজন বজায় রাখার জন্য মহাকাশ সফরের সময় প্রতি দিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ক্যালোরির খাবার খেতে হয় নভোচরদের। সেই পরিমাণ খাবার শরীরকে না দিলে শরীর ভাঙতে শুরু করে ও দ্রুত ওজন কমতে থাকে।