কোচবিহার – দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিজেপির মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূলের ‘নাম্বার টু’কে জবাব দিতে গিয়ে কোচবিহারের এই মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান বলেছন, ‘‘দেখে যান আমার কিংবা আমার স্বামীর ব্যাঙ্ক ব্যালান্স। দেখি নিন আমাদের জমির হিসেব।’’ অভিষেক ব্যানার্জীকে যিনি এমন চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তাঁর নাম দীপ্তি বর্মণ। তিনি কোচবিহার মাথাভাঙা-২, ঘোকসাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কোচবিহারে বিজেপি লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনে ভালোফল করলেও কোচবিহার জেলার ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে একমাত্র এই পঞ্চায়েতটিই গত পাঁচ বছর ধরে গেরুয়া শিবিরের দখলে।
ঘটনা হল, শনিবার মাথাভাঙার সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘‘২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর কোচবিহারের ১২৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটি পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে ছিল। মাথাভাঙা-২ ঘোক্সাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত।’’ অভিষেকের সংযুক্তি, ‘‘ওই পঞ্চায়েতের প্রধান দীপ্তি বর্মণ কী করেছে জানেন? তিনি পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে আগে কী করেছে জানেন? স্বামী রতন বর্মণের নামে জব কার্ড করেছেন। শুধু তাই নয় শ্বশুরের নামে বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। স্বামীর কাকার নামেও একটি বাড়ি আবাস তালিকায় নথিভুক্ত করিয়েছেন।’’
অভিষেকের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে দীপ্তি তাঁর টিনের বাড়ি দেখিয়ে বলেন, ‘‘দেখুন আমাদের বাড়ি এই রকম। আমার স্বামীর নাম আবাসের তালিকায় আছে। কিন্তু সেই তালিকার জন্য যে সার্ভে হয়েছিল, সেটা ২০১৮ সালের। পরে দেখলাম, তালিকায় আমাদের নামও আছে। এখন ১৬০টি বাড়ির তালিকা এসেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওরা (তৃণমূল) ভুল বুঝিয়ে আমাদের ২ পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূলে নিয়ে গিয়েছিল। পঞ্চায়েত দখল করতে না পেরে এখন বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করছেন।’’ এর পর অভিষেকের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দেখে যান আমার কিংবা আমার স্বামীর ব্যাঙ্ক ব্যালান্স। দেখি নিন আমাদের জমির হিসেব। প্রমাণ না দেখিয়ে শুধু অভিযোগ করছেন ওঁরা।’’
পাশাপাশি দীপ্তির স্বামী রতন বলেন, ‘‘আমার ঘর দেখুন। ২০১৮ সালে তৃণমূল ছিল রাজ্যে। এখনও আছে। তখন একটা সার্ভে হয়েছিল। দেখেছিলাম, আমাদের নাম আছে। কিন্তু আমরা বিডিও সাহেবকে বলেছিলাম, আমাদের বাড়ি লাগবে না। ওঁরাই বলেছিলেন বাড়ির হাল খারাপ।’’
স্বাভাবিকভাবেই একজন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানের এমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি অস্বস্তিতে পড়ে গেছেন কোচবিহারের স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। কেননা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো যা বলার শনিবারের জনসভায় বলে কলকাতা চলে গিয়েছেন। কিন্তু কোচবিহারের একমাত্র বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানের এমন চ্যালেঞ্জের মুখে সাধারণ মানুষ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কাছে জবাব চাইতে শুরু করেছে।