কলকাতা – বড়দিন ও নতুন বছরের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা বা ডিএ বৃদ্ধি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করলেন তিনি। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত হারে মহার্ঘভাতা মিলবে।
বৃহস্পতিবার শহরে বড়দিন উপলক্ষে কলকাতারই একটি চার্চের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। এত দিন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৬ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন। বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর থেকে তাঁরা পাবেন ১০ শতাংশ ডিএ। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই ঘোষণা কার্যকরী হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।
এদিন ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সবাই কিন্তু এটা পাবে। মাঝে মাঝে আমরা এটা দিই। যদিও আমাদের পে কমিশন আছে। এটা আমরা এক্সট্রা দিই। সেন্ট্রাল গভর্মেন্ট ওদের পে কমিশন নেই, ডিএ টা আছে। আমাদের এটা মেন্ডেটরি নয়। ইটস আ অপশন। কারণ আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে। এরজন্য ২৪০০ কোটি টাকা লাগবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বকেয়া টাকার যে বৈঠক করেছেন, সেকথাও বলেন। জানান, ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। তারপরেও সরকারি কর্মীদের জন্য এই বাড়তি ডিএ‘র কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘এবার একটু মিস্টি মুখ, একটু মিস্টি হাসি, একটু সুখ নিদ্রা – একটু তাঁদের পরিবারের কল্যাণ কামনা করে আমরা বড়দিনের অন দ্য ইভ অফ ক্রিসমাস এবং হ্যাপি নিউ ইয়ার উই আর গিভিং দিস গিফট।’’
ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতার ফারাক কমে হল ৩৬ শতাংশ। মমতা ঘোষণার সময়ে এ বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য ফারাক বুঝিয়েছেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে ডিএ বাধ্যতামূলক। কিন্তু রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে তা নয়। রাজ্যে ডিএ ঐচ্ছিক।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ফলে সরকারের ২,৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে উপকৃত হবেন রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী। সরকারি কর্মীদের জন্য এই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধিকে বড়দিন এবং নতুন বছরের ‘উপহার’ বলে তুলে ধরেছেন মমতা।
তবে সরকারের এই ঘোষণায় খুশি হতে পারেননি ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ডিএ-তে কেন্দ্র-রাজ্য ব্যবধান ৪০ শতাশ। ৪ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। একে ‘ভিক্ষা’ হিসাবে দেখছেন আন্দোলনকারীরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বলি, এককের ঘরের শূন্যটা কোথায় গেল? শূন্যটাকে বাম দিকে না বসিয়ে চার এর ডান দিকে বসান। আমরা কিন্তু ভিক্ষা চাইছি না।’’