নয়াদিল্লি – প্যাকেটে মাত্র একটি বিস্কুট কম থাকায় বিস্কুট কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই মামলার শেষে বিস্কুট কোম্পানিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। অর্থাৎ একটি বিস্কুটের জন্য লড়াই করে ১ লাখ টাকা পেলেন ওই ব্যক্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে চেন্নাইয়ের বাসিন্দা পি দিল্লিবাবুর সঙ্গে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হিমাচলের মানালির একটি দোকান থেকে পথকুকুরদের খাওয়ানোর জন্য ওই সংস্থার অন্যতম ব্র্যান্ড ‘সানফিস্ট মেরি লাইট’-এর বিস্কুট কেনেন তিনি। বিস্কুটের প্যাকেটে লেখা ছিল তাতে ১৬টি করে বিস্কুট আছে। কিন্তু প্যাকেট খোলার পর দিল্লিবাবু গুনে দেখেন, প্যাকেটে রয়েছে ১৫টি করে বিস্কুট। একটি বিস্কুট কম।
এরপরই দিল্লিবাবু যে দোকান থেকে বিস্কুটগুলি কিনেছিলেন সেখানে গিয়ে অভিযোগ করেন। আইটিসি সংস্থাকেও অভিযোগ জানিয়ে বিষয়টির ব্যাখ্যা চান। কিন্তু জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি দিল্লিবাবু। এরপরই দিল্লিবাবু ‘সানফিস্ট মেরি লাইট’ বিস্কুট কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে হাজির হন।
তিনি রীতিমতো অঙ্ক কষে আদালতকে তিনি জানান, প্রতিটি বিস্কুটের দাম পড়ছে ৭৫ পয়সা। অভিযোগে তিনি আরও জানান, আইটিসি সংস্থা দিনে ৫০ লক্ষ প্যাকেট বিস্কুট তৈরি করে। এই হিসাব অনুযায়ী, সংস্থাটি ক্রেতাদের এ ভাবে ঠকিয়ে দৈনিক ২৯ লক্ষ টাকা উপার্জন করে নিচ্ছে।
দিল্লিবাবুর এমন হিসেবের আইটিসি পাল্টা যুক্তি দেয়, বিস্কুটের সংখ্যা হিসাবে নয়, ওজন হিসাবে বিক্রি হয়। তাই ‘সানফিস্ক মেরি লাইট’ বিস্কুটের প্যাকেটের উপর ওজন লেখা থাকে ৭৬ গ্রাম। এবার আসে বিস্কুটের প্যাকেটের ওজনের পালা। কিন্তু বিস্কুটের প্যাকেট ওজন করে আদালত দেখে, ১৫টি বিস্কুটের প্যাকেটের ওজন হচ্ছে ৭৪ গ্রাম।
এবার আইটিসি নিয়মের দোহাই দিতে শুরু করে। আদালতে আইটিসি যুক্ত দেয়, বিস্কুটের প্যাকেটে ২ গ্রাম ওজম কম রয়েছে ঠিকই, কিন্তু ২০১১ সালের ‘লিগাল মেট্রোলজি রুলস’ অনুযায়ী প্যাকেটজাত পণ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ গ্রাম পর্যন্ত ওজনে অসঙ্গতি ধর্তব্যযোগ্য নয়। ফলে এতটুকু ওজন কম চলতেই পারে।
কিন্তু আদালতে সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। বিস্কুটের সংখ্যা কম আবার ওজনেও কম – বিস্কুট কোম্পানির গোপন খেলা ঠিকই বুঝে ফেলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। এপরই অনৈতিক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া চালানোর দায়ে আইটিসিকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে আদালত। সেই টাকা পাবেন দিল্লিবাবু।