কলকাতা – বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বাংলার ৬ কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৪.৬৫ শতাংশ। নৈহাটিতে উপনির্বাচন চলাকালীনই ভাটপাড়ায় চলল গুলি। তৃণমূল ওয়ার্ড সভাপতিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ। বাইকে এসে তৃণমূল নেতাকে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। সে সময় বোমাবাজি হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা জগদ্দলের পালঘাট রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধের নাম অশোক সাউ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, অশোক সাউ ২০১৯ সালে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। এখনও তিনি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। জানা যাচ্ছে, এদিন সকালে টোটোয় তিনি যাচ্ছিলেন। সে সময় পিছন থেকে কয়েক জন যুবক বাইকে তাঁকে অনুসরণ করছিল। পালঘাট রোড এলাকায় বাইক থেকেই এক জন যুবক তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ।
গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু ততক্ষণে বাইকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। আহত অবস্থায় অশোককে উদ্ধার করে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু কারা গুলি করল, তা নিয়েই ধন্দে আহতের পরিবার। এর পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ, নাকি পুরনো কোনও শুত্রুতা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে এই ঘটনাকে বন্ধুদের গোলমাল বলেই দাবি করেছেন অর্জুন সিং।
এক্কেবারে জলের মতো পরিস্কার, ভোটগ্রহণ শুরু হতেই পুরনো ছবির পুনরাবৃত্তি শুরু হয়ে গেল। সেই হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কা, তর্কাতর্কি এমনকী মায় গোলাগুলি পর্যন্ত – ডিটো কপি। বাংলার ভোটে যেমনটা দশকের পর দশক হয়ে আসছে।
ওদিকে, মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা নয়ন দে কে গৃহবন্দি করেছে পুলিশ। তাঁকে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ তুলে সোশাল মিডিয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
Mamata Police are adopting desperate measures to influence the Voting process to extend an upper hand to the TMC Party.
Nayan Dey; an important BJP Karyakarta of Chandra GP; Midnapore Sadar Block, is not being allowed to step outside of his house.
His house is being constantly… pic.twitter.com/p8v7kisUPc— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) November 13, 2024
উলটো দিকে ভোটের দিনও নৈহাটির বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নৈহাটিতে গণপিটুনিতে মৃত সুরজের বাড়িতে যান তিনি। পরিবারের সদস্যদের ভোট দিতে বলেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে শাসকদল।
অন্যদিকে, টোটোয় করে বিলি করা হচ্ছে প্রার্থীর ছবি দেওয়া ভোটার স্লিপ। তালড্যাংরায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মাদারিহাটে বুথের ভিতরে আলো কম। ভোট দিতে সমস্যা। ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানানো হয়েছে কমিশনে।
এদিন সকাল সকাল ভোট দিলেন সিতাইয়ের তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়। সঙ্গে ছিলেন স্বামী, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। কাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন মাদারিহাটের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটদানের বার্তা দিলেন তিনি।
তবে এদিন যখন রাজ্যের ৫ জেলার ৬ আসনে উপনির্বাচন চলছে তখন শাসকদলের নেতাদের একের পর এক ‘দাদাগিরি’র খবর লাগাতার আসতে শুরু করেছে। ভোটের কথা মাথায় রেখে এদিন দর্শনার্থীদের জন্য নৈহাটির বড়মার মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাধারণের জন্য মন্দির বন্ধ হলেও সাতসকালে পুজো দিতে মন্দিরে যান নৈহাটির তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে। তাঁকে মন্দিরের ভিতরে দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বড়মার দর্শনে আসা ভক্তরা। মন্দির বন্ধ তাহলে প্রার্থী কীভাবে ভিতরে? প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। প্রার্থীর গাড়ি ঘিরেও চলে বিক্ষোভ।