কলকাতা – ১০০ কিংবা ২০০ কোটি নয়! অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে ‘লেনদেন’ করেছেন রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বনগাঁর তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। শনিবার আদালতে তেমনটাই জানাল ইডি।
আর ইডির তদন্তকারী আধিকারিকদের এমন কথা শুনে মুখ হা হয়ে গেল বিচারকের। তিনি বলতে বাধ্য হলেন, ‘‘এত কোটির দুর্নীতি! অথচ আমরা শুনি যে পশ্চিমবঙ্গে না কি টাকাই নেই।’’
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের দাবি, মোট ৯০টি ফরেক্স সংস্থার (বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার সংস্থা) মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন করা হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশি অ্যাকাউন্টে ডলার আকারে গিয়েছে এই বিপুল পরিমাণ টাকা। শঙ্করের এক পরিচিতের কাছ থেকে সে কথা জানা গিয়েছে বলে দাবি ইডির।
শনিবার শঙ্করকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করিয়েছে ইডি। সেখানেই তারা দাবি করেছে, শঙ্করের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর।
এই টাকা প্রথমে ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় (মূলত ডলার) পরিবর্তন করা হয়েছে। ইডি এ-ও জানিয়েছে, টাকা গিয়েছে দুবাইতে। হয় সরাসরি, নয়তো বাংলাদেশ হয়ে ওই টাকা দুবাইতে পাঠানো হয়েছে।
ইডির আরও দাবি, গত ১০ বছর ধরে এই ‘দুর্নীতি’ চলছে। সে কথা শুনে বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করেন। বলেন, ‘‘এত টাকার লেনদেন, আর বলা হচ্ছে এটা নাকি গরিব রাজ্য!’’
যদিও আদালতে ইডির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শঙ্করের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার বৈধ ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা বেআইনি নয়। তাঁদের দাবি, যথাযথ নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়।
অন্যদিকে, আদালত থেকে বেরোনোর মুখে শঙ্কর আঢ্যও দাবি করেন, তিনি না কি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে চেনেনই না। মিডিয়ার প্রশ্নের উত্তরে নির্বিকার ভাবে তৃণমূলের এই নেতা বলেন, ‘‘যাঁর কথা বলছেন, তাঁকে চিনিনা। তাঁকে জানি না। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হয়েছে।’
প্রসঙ্গ, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত শঙ্কর আঢ্যকে ১৪ দিনের জন্য ইডি হেফাজত দিয়েছে আদলত। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০ জানুয়ারি।