মাদ্রিদ – বুধবার দুবাই হয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর বিমান বিকেল ৫টা নাগাদ মাদ্রিদের মাটি স্পর্শ করে। আজ আপাতত তাঁর হোটেলেই কাটানোর কথা। কোনও কর্মসূচি আপাতত নেই। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর মূল কর্মসূচি শুরু। পরের দিন অর্থাৎ, ১৫ সেপ্টেম্বর মাদ্রিদে বাণিজ্য সম্মেলন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সন্ধ্যে কিংবা রাতের দিকে কাছাকাছি ‘পায়চারি’র জন্য বেরোতে পারেন বলে খবর।
যদিও বুধবার সকালে স্পেনের বিমান ধরার সময় বিমানবন্দরের লাউঞ্জে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আচমকায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের দেখা হয়ে যায়। আর তখনই মমতাকে অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন বিক্রমসিঙ্ঘে। মমতাকে তিনি আচমকাই জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আমি কি আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি?’’ মমতা উত্তর দেন, ‘‘হ্যাঁ, অবশ্যই।’’ এর পরেই বিক্রমসিঙ্ঘের প্রশ্ন, ‘‘আপনিই কি বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন?’’
প্রতিবেশী দেশের প্রেসিডেন্টের থেকে এমন প্রশ্ন যে আসতে পারে, ভাবনাতেই ছিল না মমতার। উত্তরে ‘ওহ্ মাই গড’ বলে হাসতে দেখা যায় তাঁকে। তার পরই একটু থেমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা মানুষের উপর নির্ভর করছে।” আরও এক বার ওই একই প্রশ্ন করেন বিক্রমসিঙ্ঘে। মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, “বিরোধীরাও ক্ষমতায় আসতে পারে।”
তবে এদিন অস্বস্তির মুখে পড়েও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে নিজের ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি জানান তিনি। লেখেন, বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে আসার জন্য শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। বিক্রমসিঙ্ঘেও তাঁকে শ্রীলঙ্কায় যেতে অনুরোধ করেছেন, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও এনিয়ে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। মমতার এমন আমন্ত্রণ নিয়ে পালটা দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখন শ্রীলঙ্কার যা অবস্থা, বাংলারও তাই। সুতরাং শ্রীলঙ্কার মতো দেশকে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, ওটা কোনও বাণিজ্য সম্মেলনই না।’’
এদিকে, ‘লা লিগা’র প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার তেভাজের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠক রয়েছে মমতার। ওই বৈঠকে থাকবেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বৈঠকে যোগ দিতেই লন্ডন থেকে মাদ্রিদ আসছেন সৌরভ।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়া প্রতিনিধি দলে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিল্পসচিব বন্দনা যাদব, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব গৌতম সান্যাল ও একঝাঁক শিল্পপতি। সেই সঙ্গে মমতা ঘণিষ্ঠ সাংবাদিকদের একটি দলও এই বিদেশ সফরে এসেছে। প্রকাশনা এবং আধুনিক ক্রীড়াকে বাণিজ্যের আওতায় নিয়ে আসতে চান মমতা।