স্পোর্টস ডেস্ক – নিউ জিল্যান্ড সিরিজে ঘরের মাঠেই ভরাডুবির পর বড়সড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। ঠিক হয়েছে আবার খুব শীঘ্রই ফেরা হবে বাবু সংস্কৃতিতে। ছাঁটা হচ্ছে গৌতম গম্ভীরের ডানা। তাঁর একার হাতে আর ছাড়া হবে না রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের দায়িত্ব।
কোচ হওয়ার আগে থেকেই গম্ভীর শর্ত চাপিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। সেটা ছিল সাপোর্ট স্টাফ বা সহকারীদের নিয়ে। গম্ভীরের শর্ত ছিল, তাঁর পছন্দ মতো সহকারী কোচদের নিতে হবে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কোচের ব্যাপারে কারও অনুরোধ বা সুপারিশ তিনি শুনবেন না। আর তার ফলেই অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের কোন দল যাবে তা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নাক গলিয়েছেন গম্ভীর। না হলে কেকেআরের হর্ষিত রানার হয়তো এখনই দলে ঢোকা হত না।
যেহেতু ভারতীয় বোর্ড বিদেশি কোচ নেওয়ার ব্যাপারে একেবারেই রাজি ছিল না। তাই গম্ভীরের শর্ত মেনে নেয় বিসিসিআই। গম্ভীরের শর্ত মেনেই ভারতীয় দলের সহকারী কোচ হিসাবে নেওয়া হয় রায়ান টেন দুশখতেকে। বোলিং কোচ করা হয় মর্নি মর্কেলকে।
বোর্ড জাহির খানকে বোলিং কোচ হিসাবে চেয়েছিল। কিন্তু গম্ভীর তা মানেননি। তিনি নিজের পছন্দের বোলিং কোচকেই দলে নেন। অনেক টালবাহানার পর বোর্ড তা মেনে নেয়। যে কারণে সহকারী হিসাবে বাকিদের নাম ঘোষণা করতে সময় লেগেছিল বোর্ডের। ফিল্ডিং কোচ হিসাবে গম্ভীরের পছন্দ ছিলেন জন্টি রোডস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতীয় বোর্ড টি দিলীপকেই রেখে দেয়। এই একটা ক্ষেত্রেই গম্ভীরের দাবি মেনে নেয়নি বোর্ড।
এনিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া এক বাঙালি ক্রিকেটার বলেন, “এক সময় গম্ভীর নিজেই ভারতীয় কোচ নেওয়ার কথা বলত। কিন্তু নিজে কোচ হওয়ার পর বিদেশিদের নিল সহকারী হিসাবে। ভারতের ক্রিকেট বিদেশিদের পক্ষে বোঝা কঠিন। ভারতীয় কোচই প্রয়োজন। মর্কেল বা দুশখতে ভারতীয় ক্রিকেটের কতটা উন্নতি করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ওদের এখনই সরিয়ে দেওয়া উচিত।”
বিসিসিআই সূত্রে খবর, গম্ভীরের সর্বশেষ আবদার ছিল, নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টস্টে কী ধরনের পিচ হবে তা তিনি বেছে দেবেন। সেই দাবিও মানা হয়েছিল। কিন্তু তার ফল কী হল? তিনটি টেস্টে গো-হারা হার। প্রথম বার ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতার নজির গড়ে কিউয়িরা। যারা অন্তত একটি টেস্ট যাতে ড্র করতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে এসেছিল। কিন্তু ভারত ১২ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারে। ২৪ বছর পর টেস্টে চুনকাম হয়।
আর তাই আর দেরি না করে এবার পুরনো ‘বাবু’ সংস্কৃতিতেই ফিরতে চাইছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, দিনকয়েকের মধ্যেই একটি রিভিউ মিটিং ডাকবে বোর্ড। গম্ভীর ছাড়াও সেখানে হাজির থাকবেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর। ওই মিটিংয়েই কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়বেন গুরু গম্ভীর। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হবে, চলতি বছরের শুরুতেই তো স্পোর্টিং উইকেটে খেলে ইংল্যান্ডকে ৪-১ হারিয়েছে ভারত। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে পেস সহায়ক উইকেটে রোহিতদের আত্মসমর্পণের পরই টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে ঘূর্ণি পিচের দাবি করা হয়। কেন হঠাৎ এইভাবে বদলে গেল পিচ নীতি?
সূত্রের খবর, গম্ভীরের দাবি মেনে যেসমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেগুলো এবার পালটানোর কথা ভাবছে বিসিসিআই। আগামী দিনে ভারতীয় দল নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে গম্ভীরের, সেটাও স্পষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করবে বোর্ড।