কলকাতা – ক‘দিন আগেই ভারতের নিজস্ব ফাইটার জেট ‘তেজস’- উড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আগে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও একই কাজ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এবার মহাকাশে যেতে চান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। এনিয়ে ইসরোর (ISRO) চেয়ারম্যান এস সোমনাথের কাছে তাঁকে আবদারও করতে দেখা গেল। তবে তিনি যে আসলে মজাচ্ছলে এই আবদার করেছেন সেটা পরিষ্কার হল একটু পরেই।
আসলে বুধবার রাজভবনে গ্লোবাল এমার্জি পার্লামেন্টের সভা ছিল। তাতে যোগ দিয়েছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ (S Somnath)। সেই অনুষ্ঠানেই ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানান, ভারত এবার মহাকাশে মানুষ পাঠিয়ে ফেরত আনতে চায়। সেই নিয়ে পরিকল্পনাও চলছে। সে সময়ে কথার বলার প্রসঙ্গে কার্যত মজা করেই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose) ইসরোর চেয়ারম্যানের কাছে আবদার করে বলেন, যদি কোনওদিন সুযোগ হয়, যদি কোনও রাজ্যপাল মহাকাশে যেতে পারেন, তাহলে তাঁকে যেন প্রথম সুযোগ দেওয়া হয়।
ইসরোর চেয়ারম্যান জানান, চাঁদের অরিজিন নিয়ে সন্ধান চলছে। চন্দ্রযান ৩-এর সফল অভিযান নিয়েও কথা বলেন তিনি। চেয়ারম্যান স্পষ্ট বলেন, আসলে চন্দ্রযান ২-এর থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কোথায় কোন খামতি ছিল সেগুলিকে খতিয়ে দেখা হয়েছে। তারপরই আবারও চলেছে পরীক্ষা। সকলের কঠোর পরিশ্রম ও সম্মিলিত প্রয়াসের ফলেই সফল হয় চন্দ্রযান ৩।
ইসরোর চেয়ার এস সোমনাথের কথায়, “চন্দ্রযান ৩ নিয়ে মনে কোনও সন্দেহ ছিল না। চাঁদের কোথায় জল রয়েছে, চন্দ্রযান ১ অভিযানের পরই জানা গিয়েছিল। চন্দ্রযান ২ পাঠানো হয়েছিল অন্য একটি লক্ষ্যে। যদিও তা পূরণ হয়নি। সেগুলিকেই খুঁজে বার করতে চন্দ্রযান ৩ পাঠানো হয়। খনিজের খোঁজেই চন্দ্রযান ৩ পাঠানো হয়েছিল। চন্দ্রযান ১ -এর থেকে চন্দ্রযান ৩ পাঠানোর লক্ষ্য আলাদা ছিল।”
পাশাপাশি এস সোমনাথ একথাও জানান, ভারতের আগামী লক্ষ্য শুক্র গ্রহ। যেখানেও যান পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরো। তাঁর কথায়, “শুক্রের জন্য আমরা রেডি হচ্ছি। দ্রুত সরকারের অনুমতি নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, গগনযানের কাজ পুরোদমে চলছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে সাউন্ড স্পিডেরও। ২০২৪ সালেই গগণযানের জন্য আরেকটা উড়ান হবে বলে এদিন জানালেন ইসরোর চেয়ারম্যান।
চাঁদের জন্য আরও একাধিক অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে ইসরোর। চাঁদে একাধিক নতুন অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে, রোবোটিক মিশনস্ চালানো হচ্ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে একজন ভারতীয় চাঁদে পা রাখবে বলে জানান চেয়ারম্যান। এটাই এখন ইসরোর লক্ষ্য। তার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কীভাবে ইসরোতে সুযোগ পেতে পারেন মেধাবী ছাত্ররা, তারও পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান। প্রাথমিক বিজ্ঞান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির ওপর দক্ষতা থাকতে হবে। পাশাপাশি, মেকানিক্যাল. কম্পিউটার সায়েন্সের স্নাতক, স্নাকতোত্তর স্তরের পড়ুয়াদেরই ইসরোতে চাকরির সুযোগ রয়েছে। ইসরো দ্রুত স্কুল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে গ্রামে মহাকাশ গবেষণার আগ্রহ তৈরি হয়