নয়াদিল্লি – ইসরোর বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে আজব কাজ করে দেখাল ল্যান্ডার বিক্রম। সব তখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্য ডুবে গিয়েছে। রোভার প্রজ্ঞানকে ‘ঘুম পাড়িয়ে’ ল্যান্ডার বিক্রমকে নিয়ে করবেন ভাবছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। আর তখনই নিজের সফলতার সীমারেখাকে ছাড়িয়ে আজব কান্ড করে দেখাল ল্যান্ডার বিক্রম।
ইসরো জানিয়েছে, প্রজ্ঞানের মতো করে বিক্রমকে ‘ঘুম পাড়ানো’র আগে এক আজব ‘পরীক্ষা’ করেন বিজ্ঞানীরা। যা রীতিমতো ‘পাশ’ করে বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে গিয়েছে বিক্রম। ইসরো জানিয়েছে, সোমবার চাঁদের মাটিতে দ্বিতীয় বার সফল অবতরণ (সফ্ট ল্যান্ডিং) করেছে বিক্রম।
ইসরোর টুইট অনুযায়ী, চাঁদের মাটিতে আবার বিক্রম ল্যান্ডারের ইঞ্জিন জ্বালানো হয়েছে। আচমকা সেখানে লাফ দিয়েছে ল্যান্ডারটি। মাটি থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঁচুতে উঠে কিছু দূরে অবতরণ করেছে। ইসরোর নিয়ন্ত্রণে থেকেই এই কাজ করে দেখিয়েছে ল্যান্ডার। আগের অবস্থান থেকে ৩০-৪০ সেন্টিমিটার দূরে গিয়ে নেমেছে বিক্রম। ইসরো সেই মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো প্রকাশও করেছে।
Chandrayaan-3 Mission:
— ISRO (@isro) September 4, 2023
🇮🇳Vikram soft-landed on 🌖, again!
Vikram Lander exceeded its mission objectives. It successfully underwent a hop experiment.
On command, it fired the engines, elevated itself by about 40 cm as expected and landed safely at a distance of 30 – 40 cm away.… pic.twitter.com/T63t3MVUvI
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে চারদিকে ধুলো ছড়িয়ে পড়ছে। বিক্রম ল্যান্ডারের কিছু অংশও ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে। বিক্রমের ক্যামেরাতেই সেই মুহূর্ত ধরা পড়েছে।
ইসরো জানিয়েছে, চন্দ্রযান-৩ অভিযানের যে যে উদ্দেশ্য ছিল, তা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে। এর পরেও প্রত্যাশা ছাপিয়ে কাজ করছে বিক্রম। ইসরোর নির্দেশেই ল্যান্ডারটি লাফ দিয়ে এই পরীক্ষাটি করেছে।
এই পরীক্ষার গুরুত্ব কী? ইসরোর দাবি, ভবিষ্যতে চাঁদের মাটিতে মহাকাশচারী পাঠানো কিংবা অন্য যে কোনও অভিযানে এই পরীক্ষাটি কাজে লাগবে। বিক্রমের এই পরীক্ষাকে ‘হপ এক্সপেরিমেন্ট’ বলা হচ্ছে।
চন্দ্রযান-৩-এর যাবতীয় যন্ত্রপাতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনও গোলমাল এখনও দেখা দেয়নি বলে জানিয়েছে ইসরো। ল্যান্ডারের সঙ্গে চ্যাস্টে, ইলসার মতো যে পেলোডগুলি ছিল, সেগুলিকে গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। রোভারকে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ঘুমের দেশে’ (স্লিপ মোড)।
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে সফল ভাবে অবতরণ করেছিল বিক্রম। তার পেট থেকে বেরিয়ে এসেছিল প্রজ্ঞান। ছ’চাকা বিশিষ্ট এই রোভার তার পর থেকে ঘুরে ঘুরে চাঁদের মাটিতে নানাবিধ অনুসন্ধান চালিয়েছে। ইসরো চাঁদের মাটিতে সালফার এবং অন্যান্য খনিজের উপস্থিতির খোঁজ পেয়েছে। ১০০ মিটারের বেশি পথ অতিক্রম করেছে রোভার। চাকার সঙ্গে চাঁদের মাটিতে এঁকে দিয়েছে ইসরোর লোগো এবং ভারতের অশোকস্তম্ভের ছবি।