আগরতলা – এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত। ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত যত এগোচ্ছে, শাসকদলের নাম্বার টু, নাম্বার ওয়ানের দিকে ততই আঙুল উঠছে। কিন্তু তাতে কীও! ভোট প্রচারে এসে ত্রিপুরাকেও পশ্চিমবঙ্গের মতো ‘এগিয়ে’ নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিলেন তৃণমূলের নাম্বার টু অভিষেক ব্যানার্জী। তাঁর মুখে এদিন শোনা গেল ‘এগিয়ে বাংলা’র দাবি। পাশাপাশি তিনি এদিন ত্রিপুরার মানুষকে এমন আশ্বাসও দিলেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতা সরকার এরইমধ্যে যে যে প্রকল্প চালু করেছে, হুবহু প্রকল্প এই ত্রিপুরাতেও চালু করা হবে। মোদ্দা কথায়, ত্রিপুরাকে বাংলার জেরক্স কপি তৈরি করা হবে।
শুক্রবার ত্রিপুরার কমলপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ভোটপ্রচারে এসে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ মঞ্চের সামনে বসে থাকা জনতার উদ্দেশে জোড়াফুল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি, বাংলার সঙ্গে ত্রিপুরার তুলনাও টানেন তিনি। খাদ্য, পোশাক, ভাষা দুই রাজ্যের মিল তুলে ধরার সঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলা এখন কত এগিয়ে গিয়েছে, আর বিজেপি শাসনে পিছিয়ে গিয়েছে ত্রিপুরা।” তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের মতোই সে রাজ্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প চালু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রাজ্যে ‘নতুন ভোর’ আসছে বলেও দাবি করেছেন অভিষেক।
অভিষেক এ-ও দাবি করেন যে, রাজ্যে সিপিএম, কংগ্রেস কিংবা তিপ্রা মথার মতো বিরোধী দল থাকা সত্ত্বেও শুধু তৃণমূলের চাপের সামনে নত হয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে বদল করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আগরতলায় ভোটপ্রচারে এসেও অভিষেক একই দাবি করেছিলেন। ২০১৭ সালে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টকে হারিয়ে সরকার গড়ে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন বিপ্লব দেব। ২০২২ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় মানিক সাহাকে। নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে একাধিক বার সংবাদ শিরোনামে আসা বিপ্লবকে বিজেপি বাধ্য হয়েই সরিয়ে দিল কি না, তা নিয়ে সে সময় প্রশ্ন উঠেছিল। অভিষেক সে দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। ফলপ্রকাশ ২ মার্চ। এই প্রথম ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটে লড়ছে তৃণমূল। তবে এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে আগরতলায় পুরভোটেও লড়েছিল তৃণমূল। খাতা খুলতে পারেনি। ৫১টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি।