HomeরাজনীতিTripura Assembly election 2023 : ত্রিপুরার ইস্তেহারে সত্যিই বিজেপি তৃণমূলের নকল করেছে?

Tripura Assembly election 2023 : ত্রিপুরার ইস্তেহারে সত্যিই বিজেপি তৃণমূলের নকল করেছে?

- Advertisement -

আগরতলা – ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিতে গিয়ে তৃণমূলের নকল করছে বিজেপি? বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশের পর সংবাদ মাধ্যমের একাংশ এমনই দাবি করতে শুরু করেছে। কারণ, দিন কয়েক আগে তৃণমূল ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের জন্য যে ইস্তেহার প্রকাশ করেছে তার সঙ্গে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারের মিল।

এদিন ত্রিপুরায় গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দিরে পুজো দিয়ে বিজেপির ‘সংকল্প পত্র’ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রকাশ করা হয়েছে সমাজমাধ্যমে প্রবল জনপ্রিয় গানের সুরের আদলে ভোটের ‘থিম সং’ও। বিজেপির ‘সংকল্প পত্র’-এর প্রথম প্রতিশ্রুতি ‘বালিকা সমৃদ্ধি স্কিম’। বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবারে জন্মানো কন্যাসন্তানের জন্য ৫০ হাজার টাকার একটি বন্ড দেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে, বাংলায় তৃণমূল সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে এর অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। যদিও বাংলায় বন্ডের ব্যাপার নেই।

দেখা যাক, কে কার নকল করেছে

বিজেপির ‘সংকল্প পত্র’-এ দাবি করা হয়েছে, ৫ টাকা প্রতি প্লেটের হিসাবে রাজ্যে তিন বার রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হবে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে অনুকূলচন্দ্র ক্যান্টিন। ঠিক একই রকম প্রকল্প রয়েছে বাংলাতেও। যার নাম, ‘মা ক্যান্টিন’। কিন্তু অনেকের মতে মমতার ‘মা ক্যান্টিন’ আসলে দিল্লির কেজরিওয়াল সরকারের `থালি’ প্রকল্পের নকল। তবে কেজরির থালির নকল শুধু মমতা করেননি এমনকী শিবসেনা মহারাষ্ট্রে ‘শিব ভোজন থালি’ বিজেপি ‘দিন দয়াল থালি’ বলে চালানোর চেষ্টা করেছে। ত্রিপুরায় সেটাই অনুকূলচন্দ্র ক্যান্টিন।

এ ছাড়া বিজেপি তার ‘সংকল্প পত্র’এ আশ্বাস দিয়েছে, ত্রিপুরায় ভোটে জিতে ফিরে এলে ৫০ হাজার মেধাবী কলেজ পড়ুয়াকে স্মার্টফোন দেবে বলে ইস্তাহারে লিখেছে। বাংলাতেও নবম এবং একাদশের পড়ুয়াদের স্মার্টফোন কেনার টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মমতার এই স্কিমও দক্ষিণী রাজনৈতিক নেতাদের অনুকরণ কিংবা উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদবের অনুকরণ বলে অনেকে বলেন।

ভোটের প্রচার করতে ‘থিম সং’ প্রকাশ করা ইদানীং দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই। বিশেষ করে বাংলায় ২০২১-এর ভোটের আগে নিয়ম করে গানের ছড়াছড়ি দেখা গিয়েছিল। বাম থেকে ডান, তৃণমূল থেকে বিজেপি— সকলেই একাধিক ‘থিম সং’য়ে বাজার মাত করতে চেষ্টার কসুর করেনি। একই চিত্র ত্রিপুরাতেও। এখানেও ভোটের আগে গান প্রকাশ করেছে বিজেপি। তাতেও দিদিভক্তদের দাবি, তৃণমূলকে নকল করা হয়েছে। যদিও বাংলার মতো লক্ষীর ভান্ডার, দুয়ারে সরকারের মতো কোনও প্রকল্পের ঘোষণা নেই বিজেপির সংকল্প পত্রে।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিজেপির ‘সংকল্প পত্র’র মূল প্রতিশ্রুতিগুলি ঠিক কী –

১) মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা: এই প্রকল্পের মেধাবী কলেজ ছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুটি প্রদান করা হবে।

২) বালিকা সমৃদ্ধি স্কিম: কন্যা সন্তানের জন্য আর্থিক ভাবে দূর্বল শ্রেণির প্রতিটি পরিবারকে ৫০,০০০টাকা একটি বন্ড প্রদান।

৩) সকল যোগ্য ভূমিহীন নাগরিকদের পাট্টা বিতরণ।

৪) প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সমস্ত সূবিধা ভোগীদের বিনামূল্যের ২ টি এলপিজি সিলিন্ডার।

৫) অনুকূলচন্দ্র ক্যান্টিন, যেখানে ৫ টাকা প্রতি প্লেট দরে দিনে তিনবার রান্না করা খাবার মিলবে।

৬) পিডিএস উপভোক্তাদের জন্য প্রতি মাসে বিনামূল্যে চাল ও গম এবং বছরে চারবার ভর্তুকি দরে ভোজ্য তেল।

৭) ত্রিপুরা জনজাতি বিকাশ যোজনায় তফসিলি উপজাতি পরিবারকে ৫,০০০ টাকা করে বার্ষিক আর্থিক সহায়তা প্রদান।

৮) উপজাতীয় সংস্কৃতি অধ্যায়ন, গবেষণা, প্রচার ও সংরক্ষণের জন্য গন্ডাছড়ায় মহারাজা বীর বিক্রম মাণিক্য উপজাতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।

৯) প্রধান সমাজপতিদের প্রতি মাসে সম্মানী ভাতা ২,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫,০০০ টাকা করা।

১০) প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনার আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রতি বছর ৬,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮,০০০ করার প্রতিশ্রুতি। এ ছাড়া ভূমিহীন কিষাণ বিকাশ যোজনায়, সমস্ত ভূমিহীন কৃষকদের প্রতি বছর ৩,০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা। মৎস্য সহায়ক যোজনায় সমস্ত জেলেকে ৬,০০০ টাকা বার্ষিক আর্থিক সহায়তা।

১১) আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে প্রতি-পরিবারের বার্ষিক ক্যাপ ৫ লক্ষ টাকা থেকে দ্বিগুন করে ১০ লক্ষ টাকা।

১২) মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগযোগ যোজনার অধীনে প্রায় ৫০,০০০ মেধাবী কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের স্মার্টফোন প্রদান।

১৩) আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যে সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের উদ্দেশে ১,০০০ কোটির বিনিয়োগ।

১৪) প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তীর্থ যোজনা চালু করার প্রতিশ্রুতি। এছাডা় এবং অযোধ্যা, বারাণসী, উজ্জয়ন ইত্যাদিতে ভর্তুকিযুক্ত ট্রেনের ভ্রমণ, থাকার ব্যবস্থা এবং ভাতা প্রদান।

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -