Homeসম্পাদকীয়Subhaprasanna: ‘কাকশিল্পী’র ঠোকরে ঘা বাড়ছে তৃণমূলের

Subhaprasanna: ‘কাকশিল্পী’র ঠোকরে ঘা বাড়ছে তৃণমূলের

- Advertisement -

কেউ বলছেন অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করছেন। আবার কেউ বলছেন, ওরকম কাক আঁকা শিল্পী না কি অনেক আছেন। শুভাপ্রসন্নকে (Subhaprasanna) নিয়ে তৃণমূলের এখন না এদিক, না ওদিক অবস্থা। ‘দাওয়াত’ ও ‘পানি’র এত গুণ যে তৃণমূল এখন নিজের কর্মের কথা নিজেই স্বীকার করছে। তৃণমূলের গোপন কৃতকর্ম ধরা পড়ে যাচ্ছে। এবং তৃণমূলের নেতারা নিজেরাই সেসব কথা এখন স্বীকার করছেন।

প্রথমেই আসা যাক তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) কথায়। শুভাপ্রসন্নকে আক্রমণ করতে গিয়ে কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেছেন, শিল্পী না কি অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করছেন। শুভাপ্রসন্নের (Subhaprasanna) কোনও কমিটির পদ বা জমি লাগবে কি না, সেই বিষয়টি দলের খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন। এই মন্তব্য করে কুণাল ঘোষ কী বোঝাতে চাইলেন?

রেলমন্ত্রী থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই শুভাপ্রসন্নকেই (Subhaprasanna) রেল কমিটিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কমিটির দায়িত্ব রেলের প্যাসাঞ্জারদের সুবিধা কী করে বাড়ানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ করা। শুভাপ্রসন্নর কমিটিতে জায়গা পাওয়ার ফলে কমিটিতে জায়গা পাওয়ার ফলে রেলের যাত্রীদের কতটা লাভ হয়েছিল, সেটা তদন্ত করে দেখা যেতে পারে। কিন্তু শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে মমতার সম্পর্ক ছিল একেবারে দেখার মতো।

তারপর মমতার আরও উত্থান হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হলেন। শুভাপ্রসন্নর মতো আরও বাঙালি বিশিষ্টরা মমতার চারপাশে ভিড় বাড়ালেন। সেই ভিড়ে শুভাপ্রসন্ন, সুমন, নচিকেতার মতো লোকেরা পিছনের সারিতে চলে গেলেন। এখন ‘দাওয়াত’ ও ‘পানি’ নিয়ে তর্ক-বিতর্কে শুভাপ্রসন্ন ফের মিডিয়ার খবরে চলে এসেছেন। এখন তাঁকে ‘চুপ’ করাতে কুণাল ঘোষ পুরনো সেই ফর্মুলার কথাই বলছেন।

তৃণমূলের আরেক নেতা ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি (Idrish Ali) আরও একধাপ এগিয়ে বললেন, ‘উনি কাক এঁকে বড় শিল্পী হয়েছেন। আমি মনে করি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে না এলে ওনাকে কেউই চিনত না। আমি আজও চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, শুভাপ্রসন্নবাবুকে বাংলার মানুষ ক’জন চেনেন? ভগবানগোলার দশজন মানুষও চেনেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিলে, ওনার আর কোনও দাম আছে বলে আমি মনে করি না। ওরকম কাক এঁকে শিল্পী অনেক আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে না এলে উনি তলিয়ে যাবেন।’

ইদ্রিস আলি ভদ্রলোক নেহাতই রাজনীতিতে শিশু। যে শিশু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়ায় ‘করে কম্মে’ খাচ্ছেন। ইদ্রিস জানা উচিত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শিল্পী’ হিসেবে পরিচয় তৈরি করার পিছনে ‘কাকশিল্পী’ শুভাপ্রসন্নর একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। সেদিন যদি এই ‘কাকশিল্পী’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি নিয়ে ‘দৌঁড়ঝাপ’ না করতেন, তাহলে অনেকেই যেটা বলেন, কোটি কোটি টাকায় সেই ছবি বিক্রি হতো না। এ নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে। সুতরাং যতটা পারা যায় মুখ বন্ধ রাখায় ভালো।

পরিশেষে এটাই বলতে হয়, কৃতকর্ম কোনও দিন চাপা থাকে না। এক সময় শুভাপ্রসন্নকে তৃণমূল নেত্রী যদি আস্কারা না দিতেন আজ এভাবে ‘দাওয়াত’ ও ‘পানি’ নিয়ে তর্ক করতে হতো না। মনে রাখা প্রয়োজন, যোগ্যরা নিজের ক্ষমতায় ক্ষমতাবানদের প্রিয়পাত্র হন। কিন্তু অযোগ্যরা সেই সুযোগ পেলে মাথায় চড়ে বসেন। আজ শুভাপ্রসন্নর মতো ‘কাকশিল্পী’ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজিয়া করার সাহস পেয়েই থাকেন, তার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে। কেননা, একদিন তিনিই শুভাপ্রসন্নকে রেলের কমিটিতে ঢুকিয়ে ছিলেন এবং বাংলার প্রথমসারির শিল্পী হিসেবে সম্মান দিয়েছিলেন। আজ কুণাল ঘোষ কিংবা ইদ্রিস আলির ফোঁপানিতে বিতর্ক বাড়বে বই কমবে না।

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -