করচি – না বলা কথাটি শেষ পর্যন্ত বলেই ফেললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ (Khawaja Asif)। বলেই ফেললেন, পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে নয়, দেউলিয়া (Pakistan Default) হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানে এখন শাক-সব্জি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন চাল, ডাল, আটা, ময়দা, খাবার তেল, মুরগির মাংস, গোস্ত – সবকিছুর দামই লাগামছাড়া। অনেক মানুষ একবেলা খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে, দু‘দিন আগে শেহবাজ শরিফের সরকার নতুন করে আইএমএফের শর্ত মানতে মিনি বাজেট পেশ করেছে। যার জেরে পেট্রোলের দাম ২৬টাকা বেড়ে ২৭৮ লিটার হয়ে গিয়েছে। সিমেন্ট, বিদ্যুৎ, গ্যাস সবকিছুই বলতে গেলে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসিফ জানালেন, পাকিস্তান ‘দেউলিয়া’ হওয়ার পথে হাঁটছে এমন নয়, ‘দেউলিয়া’ হয়ে গিয়েছে।
- নতুন প্রযুক্তির প্যানকার্ড আনছে সরকার, পুরনো কার্ডের কি হবে জানিয়ে দিল কেন্দ্র
- পারথ টেস্টে ঐতিহাসিক জয়, টেস্ট বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকায় আবার সবার ওপরে ভারত
সিয়ালকোটে একটি সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) নেতা খাজা আসিফ (Khawaja Asif) জানিয়েছেন, ‘‘লোকজন নিশ্চয়ই শুনেছেন যে, দেশ দেনার দায়ে ডুবেছে। আর্থিক সঙ্কট চরম হয়েছে। যা শুনেছেন, তা একেবারে ঠিক। আমরা এক দেউলিয়া দেশের বাসিন্দা। লোকজন বলছে পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এবং সেখানে আর্থিক সঙ্কট চরমে। আসলে দেশ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। এ বার আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’’ দেশে এক লিটার দুধের দাম ২৫০ টাকা। এক সময় রোজের খাবারে যা থাকত, সেই মুরগির দামও সাধ্যের বাইরে। এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ৭৮০ টাকা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, দেশ এখন ‘দেউলিয়া’।
একটি বেসরকারি কলেজের সম্মলনে গিয়ে দেশের এই পরিস্থিতির জন্য আসিফ পূর্বতন ইমরান খান সরকারকেই দুষেছে। তাঁর অভিযোগ, ইমরানের সরকারের আমলেই দেশে ফের সন্ত্রাসবাদের আমদানি হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের ‘নিয়তি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ রয়েছে পাকিস্তানেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আইএমএফ (আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার)-এর সাহায্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’’
খাজা আসিফের বক্তব্যের এই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল। এই নিয়ে শাহবাজ শরিফ সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিরোধী পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ) নেতারা। ইমরানের দলের নেতাদের কটাক্ষ, গত ১০ মাসে দেশকে ‘শোচনীয়’ পর্যায়ে নামিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে আইএমএফ থেকে ৬০০ কোটি ডলার অনুদান (বেলআউট) নিয়েছিল পাকিস্তান। ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যার পর ১১০ কোটি ডলার অনুদান পেয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে সেই অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দেয় আইএমএফ। আঙুল তোলেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপান-উতোরের দিকে। রাজস্বের ঘাটতি নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছে আইএমএফ। এখন সে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের মন্ত্রীই সে দেশকে ‘দেউলিয়া’ ঘোষণা করলেন।