Homeপশ্চিমবঙ্গJustice Abhijit Ganguli: ‘‘সৎ রঞ্জন এতদিন পর গ্রেফতার! এখন আর কী হবে‘‘...

Justice Abhijit Ganguli: ‘‘সৎ রঞ্জন এতদিন পর গ্রেফতার! এখন আর কী হবে‘‘ – হতাশার সুর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায়

- Advertisement -

কলকাতা – সৎ রঞ্জন গ্রেফতার হলেন বটে। কিন্তু বড্ড দেরিতে। এখন তাঁকে গ্রেফতার করে আর কি পাওয়া যাবে। শুক্রবার সিবিআইয়ের হাতে চন্দন মণ্ডল ওরফে ‘সৎ রঞ্জন’-এর গ্রেফতারি এমনটাই মন্তব্য করলে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যে মন্তব্যকে বাংলার একাংশ মিডিয়া ‘চন্দন মণ্ডলের গ্রেফতারিতে ‘অখুশি বিচারপতি’ বলে চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সত্যিই কি বিচারপতি গাঙ্গুলি এদিন চন্দন মণ্ডলের গ্রেফতারি অখুশি হয়েছেন? না কি তিনি অন্য কোনও কিছু বোঝাতে চেয়েছেন?

আসলে কলকাতা হাই কোর্টে নিজের এজলাসে বসেই এদিন খবরটা পান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মিডিয়াতে সেই খবর প্রচারিত হতেই এজলাসের মধ্যে গুজগুজ ফুঁসফুঁস শুরু হয়। সে নিয়ে এজলাসে হাজির এক আইনজীবী এই খবরের দিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাতেই বিচারপতি হতাশার সুরে বলেন, এত দিন ধরে তদন্ত চলছে এখন রঞ্জনকে গ্রেফতার করে কিছুই হবে না। তিনি জানান, জানান, বাগদার রঞ্জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কে, সৎ রঞ্জন গ্রেফতার হয়েছে তো? হ্যাঁ, আমি জানি।’’ এর পরেই সংশয়ের সুর বিচারপতির গলায়। বলেন, ‘‘কিন্তু কী হবে? কিছুই হবে না। গত ৭-৮ মাস ধরে তো তদন্ত চলছে। এখন তাঁকে গ্রেফতার করে কী হবে?’’

আসলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রঞ্জন মণ্ডলের গ্রেফতারিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। সেটাই তাঁর মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি রঞ্জন মণ্ডলের গ্রেফতারি খুশি না অখুশি – সেটা বোঝানোর জন্য এমন মন্তব্য করেন নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একথা ঠিক, এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন তাতে তাঁর হতাশা ঝড়ে পড়েছে। কেননা, বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রকে দুর্নীতিমুক্ত করার পণ তিনি নিয়েছেন। তিনি চেয়েছিলেন, সিবিআই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই মামলায় তদন্ত শেষ করবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতের সামনে পেশ করবে। কিন্তু আদালত যত তাড়াতাড়ি সেই গ্রেফতারি আশা করেছিল, সিবিআই তত তাড়াতাড়ি তদন্ত করে দেখাতে পারেনি। যার জেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর বড় কোনও মাথাকে এখনও সিবিআই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারেনি। যা নিয়ে মাঝে মাঝেই আদালতকে হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।

তাছাড়া, এই রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলকে নিয়ে বহু আগেই সিবিআইয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস আদালতকে আশ্বাস দিয়েছিল – প্রয়োজনে ‘সৎ রঞ্জন’কে বাগে পেতে তিনি সিবিআইকে সাহায্য করবেন। কিন্তু সেই সাহায্য আদৌ সিবিআই নিয়েছিল কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, আদালত আরও আগেই চন্দন মণ্ডলের গ্রেফতারি আশা করেছিল। কেননা, যেভাবে চন্দন মণ্ডল কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে আড়ালে-আবডালে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন – তাতে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিই তছনছ করার সুযোগ পেয়েছে। এখন তাঁকে গ্রেফতার করলেও সেসব নথি আর সিবিআইয়ের হাতে আসবে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটাই এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর মন্তব্যের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেরা করার জন্য শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জনকে নিজাম প্যালেসের কার্যালয়ে তলব করেছিলেন তদন্তকারীরা। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন চন্দন। তার পরেই চন্দন ওরফে রঞ্জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই খবর এসে পৌঁছয় হাই কোর্টের এজলাসে বসা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছেও। গ্রেফতারির খবর পেয়ে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এই খবর নিয়ে বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -