HomeUncategorizedUnemployed Life: জীবনের বেকার দশা কাটানোর গোপন উপায়

Unemployed Life: জীবনের বেকার দশা কাটানোর গোপন উপায়

- Advertisement -

বেকারত্ব (Unemployment) নিয়ে আমরা বিশেষ প্রতিবেদন শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য বেকার জীবনের (Unemployed Life) আসল মানে বুঝে যাতে বেকাররা (Enemployed) বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। নিজেকে বেকারত্বর জ্বালা থেকে মুক্ত করতে পারে। সবার আগে নিজের দুর্বলতাকে জানতে হবে। তারপর লড়াইয়ে ঝাঁপাতে হবে। কিন্তু নিজের দুর্বলতা না জেনে লড়াইয়ে ঝাঁপালে ব্যর্থতা আসবেই আসবে। সেই ব্যর্থতাকে কাটাতে কিভাবে সবার আগে অন্যের দিকে, পরিস্থিতির দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের দিকে আঙুল তুলতে হবে, কিভাবে পৃথিবী জয় করার আগে নিজের সঙ্গে নিজে লড়াই করে জয়ী হতে হবে – তার রাস্তা দেখানোর চেষ্টা করব আমরা। পর্ব আকারে সে সব নিয়ে আমরা লাগাতার আলোচনা করব। নজর রাখুন পারফেক্ট পলিটিক্স-এ।

বেকার জীবন ছবি (Unemployed Life)

আচ্ছা, সকালে যখন তুমি ঘুম থেকে ওঠ – কী কর? নিশ্চয় বলবে, ‘‘আর পাঁচটা লোক যা করে, আমিও তাই করি।’’ যদি প্রশ্ন করি, তারপর সারাদিন তুমি কী কর? সেই একই উত্তর রিপিট হবে, ’’কেন, আর পাঁচটা লোক সারাদিন যা করে, আমিও তাই করি।’’ বেশ বেশ, রাতে তুমি কী কর? নিশ্চয় বেশির ভাগই তোমরা উত্তর দেবে, ’’আরে বাবা আর পাঁচটা লোক যা করে আমিও তাই করি।’’ তাই তো, মানুষ তো সামাজিক জীব। সুতরাং সমাজে থাকতে গেলে, সমাজের মানুষ যা করে তাই তো করবে। না হলে চলবে? কিন্তু এই মোটা মোটা তিনটি প্রশ্নর উত্তরেই তুমি বুঝিয়ে দিচ্ছ, তুমি একজন আম পাবলিক। তুমি আর পাঁচজনের একজন। আর পাঁচজন সকালে উঠে যেমন হেগে-মুতে দিন শুরু করে, তুমিও তাই কর। আর পাঁচজন যেমন দিনভর এর-ওর সঙ্গে গল্প করে দিন কাটিয়ে দিতে চায়, তুমিও তাই চাও। আর পাঁচজন যেমন বাধ্য হয়ে সংসার চালানোর জন্য কাজ খোঁজে, তুমিও বাধ্য হয়ে চাকরি খুঁজছ। আর পাঁচজন রাতে দু‘টো ভালো-মন্দ খেয়ে যেমন শান্তিতে ঘুম চায়, তুমিও তাই চাও।

    পরেরদিন আবার যেমন পাঁচজন ঠিক একইভাবে তাদের দিন শুরু করে তুমিও তাই করতে চাও। এইভাবেই সপ্তাহ কা সপ্তাহ, মাস কা মাস, বছর কা বছর কেটে যায়। কিন্তু তোমার কপালে চাকরি জোটে না। যদি জোটেও বা মনের মতো হয় না। যদি বা মনের মত হয়ও – গাড়ি, বাড়ি হয় না। গাড়ি বাড়ি যদি হয়ও মনে শান্তি আসে না। এক সময় এক অতৃপ্ত আত্মা হয়ে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়। কিন্তু মনের আশ মেটে না। কোনদিন ভেবে দেখেছ কি – কেন? তুমি যখন আর পাঁচটা লোকের মতোই তোমাকে চাকরি দেবে কেন? তুমি যখন আর পাঁচটা লোকের মতোই দিন কাটাতে চাও – আলাদা করে তুম ওই পাঁচজনের থেকে বেশি পাবে কেন? তুমি যখন শান্তিতে রাতে ঘুমোতেই চাও তাহলে সফল হওয়ার স্বপ্ন তোমার চোখে আসবে কেন?

    বেকার ছেলেদের স্ট্যাটাস (Unemployed Life Status)

    এত যে কেন কেন, এই কেনগুলির উত্তরের পিছনেই লুকিয়ে রয়েছে তোমার সফলতা ও অসফলতার কাহিনী। বন্ধু তুমি ব্যর্থ, কারণ দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই ব্যর্থ। তুমি ব্যর্থ, কারণ দুনিয়ার আর পাঁচজনও ব্যর্থ। তুমি ব্যর্থ কারণ – তুমি তোমার দিন ব্যর্থ হয়েও কাটাতে চাও। তুমি ব্যর্থ কারণ – তুমি তোমার সারাদিনের নানা কাজকর্মের মধ্যে ব্যর্থতাকে উপভোগ কর। তোমার ভালো লাগে, চায়ের দোকানে, পাড়ার আড্ডায়, প্রেমিকার কাছে, মা-বাবার কাছে বলতে – আমি তো চেষ্টা করছি চাকরির। কিন্তু হচ্ছে না। জানোই তো আজকাল চাকরির কী বাজার। আমার থেকে কত ভালো ভালো ছেলে রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তারাই যখন চাকরি পাচ্ছে না, আমি পাব কী করে? তোমার বলতে ভালো লাগে – এই সরকারটাই যত সর্বনাশের মূল।

    এই সরকার সব চাকরি খেয়ে নিল। এই সরকার সব বিক্রি করে দিল। এই সরকার নিজেদের লোকদের, পার্টির লোকদের সব চাকরি দিয়ে দিল। আমি পার্টি করি না, আমি পলিটিক্স করি না, আমি সাতে পাঁচে থাকি না, আমি খারাপ ছেলের সঙ্গে মিশি না, আমি লোকের মন্দ চাই না, আমি কারও খারাপ চাই না – তাও আমাকে কেউ একটা চাকরি দিল না। ওপরওয়ালা আমাকে চাকরির পরীক্ষায় পাশ করাল না । ভাগ্য আমার সফলতায় সাহায্য করল না। মা বাব আমাকে চাকরি ঘুসের জন্য ৫ লাখ টাকা দিল না। কাঁদ। কাঁদতে থাক।

    এই ভাবেই সারাজীবন লোকের সহানুভূতির আশায় বসে থাক। নিজের ব্যর্থতার জন্য লোককে দোষ দাও। আর সারাদিন, সকাল থেকে রাত – আর পাঁচটা লোকের মতো জীবন কাটানোর ইচ্ছে মনের গোপনে পুষে যাও। কাউকে বলবে না – আসলে তুমি কী চাও! কাউকে জানতে দিওনা তুমি কোনও স্বপ্ন দেখ না। শুধু বাইরে বুক ফুলিয়ে বলে বেরাও – আমার তো এ নেই, আমার তো সে নেই। ওহ, আমার যদি এটা থাকত, দুনিয়াকে দেখিয়ে দিতাম। আমার যদি টাকা থাকত, ব্যবসা কাকে বলে দেখিয়ে দিতাম। আমার যদি পলিটিশিয়ান মামা থাকত, চাকরি কাকে বলে দেখিয়ে দিতাম। থানার দারোগা যদি আমার জ্যাঠামশাই হত, আমি লোককে বুঝিয়ে দিতাম – আমি কী জিনিস!

    বেকার ছেলের কষ্টের গল্প (Unemployed Life Story)

    বুকে হাত রেখে ভেবে দেখ, এই কথাগুলোই আমাদের বুকের গভীরে, মনের গভীরে বাসা বেঁধে বসে আছে। আত্মা বার বার বলতে চায়, নিজেকে আর পাঁচ জনের থেকে আলাদা কর, নিজের আর পাঁচজনের থেকে আলাদা পরিচয় তৈরি কর। কিন্তু আমাদের আলাদা পরিচয়ের দৌঁড় ওই আয়না আর জামা-প্যান্ট পর্যন্ত। আয়নায় গিয়ে কয়েক মিনিট নিজের চুল নানাভাবে আচড়ে আমরা আর পাঁচজনের থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করি। নতুন নতুন ডিজাইনের প্যান্ট জামা কিনে, দামি দোকান থেকে দামি ব্র্যান্ডের কাপড় কিনে আমরা আমাদের চারপাশের লোকজন থেকে আদালাদা হওয়ার চেষ্টা করি। ব্যস ওই পর্যন্তই। কিন্তু সত্যি করে আলাদা পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা আমরা করি কি? সত্যিই কি আমরা আমাদের চারপাশে থাকা লোকগুলো থেকে আলাদা স্বপ্ন দেখার চেষ্টা করি, আলাদাভাবে বাঁচার চেষ্টা করি? উত্তর হল করি না। করি না বলেই – আয়নায় নিজেকে দেখে মনে হয় – আমি সবার থেকে দেখতে সুন্দর। সুতরাং কলেজের ওই মেয়েটা আমার দিকে না তাকিয়ে যাবে কোথায়? ওকে আমি পটাবোই।

    নিজেকে বোঝাতে হবে যেভাবে (How to Tackle Unemployed Life)

    আরে, প্রেমিকা পটালেই যদি জীবনের লক্ষ্যে সফল হওয়া যেত – তাহলে আর কিছু করার দরকার ছিল না। আয়নায় চুল আচড়ালেই হতো। কিন্তু আমাদের মাথায় এই কথাটা ঢুকতেই আর্ধেক জীবন চলে যায় – আমাদের আসল লক্ষ্য কী! আমরা কী করতে চাইছি? নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করব কী করে? কী করে চাকরির ইন্টারভিউয়ে গিয়ে সবার আলাদা করে নজর কাড়ব? কী করলেই বা আমার পিছনে চাকরি ছুটবে। চাকরির পিছনে আমি নয়? সব প্রশ্নের উত্তর তুমিই জান বন্ধু। কিন্তু তুমি বেহুঁশ হয়ে রয়েছে। তোমার মাথা কাজ করছে না। তুমি তোমার মনে লাগাম পড়াতে পারছ না। তুমি তোমার আত্মার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছ না। যেদিন শুনবে – চাকরিও তোমার পিছনে সুরসুর করে আসবে।

    (আগের স্টোরি) (চলবে)

    - Advertisement -
    - Advertisement -
    - Advertisement -
    - Advertisement -