HomeখবরAdenovirus in Kolkata: শিশুমৃত্যুতে হাহাকার কলকাতায়, গরমই ভরসা - বলছেন শাসকদলের নেতা

Adenovirus in Kolkata: শিশুমৃত্যুতে হাহাকার কলকাতায়, গরমই ভরসা – বলছেন শাসকদলের নেতা

- Advertisement -

কলকাতা: এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে (Adenovirus in Kolkata) একের পর এক শিশু মারা যাচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, শুধুমাত্র কলকাতার বড় কয়েকটি হাসপাতালেই গত দু‘মাসে ৯৪টি শিশু মারা গিয়েছে। গ্রাম বাংলার হিসেব এতে ধরা নেই। কিন্তু এরপরেও প্রশাসনের টনক নড়েছে বলে মনে হয় না।

যদিও শাসকদলের নেতা তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) না কি ঘন ঘন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে, ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। কিন্তু সেই বৈঠকের পরেও কলকাতার হাসপাতালগুলিতে (Adenovirus in Kolkata) পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

আর যদি কিছু পরিবর্তন হয়েই থাকে, মানে শিশুমৃত্যুর হার (Adenovirus in Kolkata) কমেই থাকে – সেটা কী কারণে হয়েছে, সেটার ব্যাখ্যা আবার অন্য দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম মহাশয়। তাঁর কথায়, ‘‘ভালো খবর, গরমটা যথেষ্টই পড়েছে। তাতে এই যে নিউমোনিয়া এবং বাচ্চাদের অ্যাডিনো ভাইরাস, তার প্রকোপ কমে এসেছে।’’

ফিরহাদ হাকিমের এমন মন্তব্যেই স্পষ্ট, শিশুমৃত্যু রুখতে রাজ্য সরকারের ভরসা ঘুরে-ফিরে সেই গরম। রোদ হবে, ভাইরাস মরবে। এই চিরাচরিত প্রাকৃতিক নিয়মের সাফল্যের ওপরেই এখন পশ্চিমবঙ্গে শিশুমৃত্যুর পরিস্থিতি নির্ভর করছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী কোন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করছেন? যাঁরা গরমের ভরসায় বসে রয়েছেন?

এই মুহূর্তে কলকাতার শিশু হাসপাতালগুলিতে সন্তানহারাদের হাহাকার চলছে। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, রবিবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে মহানগরীতে। একদল মায়েরা সন্তান হারিয়েছেন আর অন্যদল ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন সন্তান বাঁচানোর তাগিদে।

এই পরিস্থিতিতে এখন অভিযোগ উঠছে,হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। তাই অনেক শিশুকে বাধ্য হয়েই সাধারণ শয্যায় রেখে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে মৃত্যু বাড়ছে। শুধু বিসি রায় হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জন শিশুর।

রবিবার মৃত শিশুদের মধ্যে একজনের ‘‌ডেথ সার্টিফিকেট’‌–এ মৃত্যুর কারণ হিসাবে ‘অ্যাডিনোভাইরাল নিউমোনিয়া’র কথা বলা হয়েছে। তাহলে বাকিদের কি হয়েছিল?‌ সেটা এখনও স্পষ্ট করেনি হাসপাতাল। আর এই অস্পষ্টতার পিছনে ঘুরে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ি করছেন বিরোধীরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ ৩ দিন আগে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে শিশুমৃত্যু সম্পর্কে বলেছিলেন, মাত্র দু‘জন শিশু নাকি অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বাকিরা সবাই কো-মরবিডিটির শিকার। সুতরাং কোনও শিশুর অ্যাডিনো ভাইরাসে মৃত্যু হলে ডাক্তারদের ভাবতে হচ্ছে ডেথ সার্টিফিকেটে কি লিখবেন। কি লিখলে মুখ্যমন্ত্রীর কোপ থেকে রক্ষা পাবেন।

অথচ, সন্তানহারা বাবা-মা‘দের একটাই আবেদন, শিশুদের চিকিৎসাটুকুর জন্য অন্তত বেডের সংখ্যা বাড়ানো হোক। আইসিইউ‘র সংখ্যা বাড়ানো হোক। কোথায় কি? দিন কয়েক আগে ৫০টি বাড়তি বেডের কথা ঘোষণা করে সেই যে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করা শুরু করেছেন, তারপর তাঁর আর দেখা নেই।

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই বাংলার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ঢ্যারা পিটিয়ে রাজ্যের শাসকদল এগিয়ে বাংলার দাবি করেন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের কাছে দক্ষিণভারতে না গিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করানোর উপদেশ দেন, সেই শহরে যদি এভাবে ডজন ডজন শিশু মারা যায়, কেউ তাঁর কথা বিশ্বাস করবে?

বিরোধীরা আরও একটা অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে অনেক হাসাপাতাল বিল্ডিং তৈরি করেছেন, কিন্তু তাতে ডাক্তার-নার্স কিছুই নেই। সবই শূন্য। বাইরে থেকে লোকের চোখে ধূলো দেওয়া। মন্দির তৈরির পর তাতে যদি দেবতাই না থাকেন, তাহলে সেই মন্দিরের প্রয়োজন কি?

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -