কলকাতা – গরুপাচারের বিপুল টাকা সরানো হয়েছে দুবাইতে। কেবল টাকা পাচার নয়, ভুয়ো রফতানির নথি দেখিয়ে কেন্দ্র সরকারের তহবিল থেকে আয় করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই করেছে গরুপাচারের কিংপিন এনামুল হকের ৩ ভাগ্নে। গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডিরেক্টরেট অফ রেভেনিউ ইনটেলিজেন্সের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই বিস্ফোরক তথ্য।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ৩৬ দিনে ২৩ কোটি টাকার জামাকাপড় দুবাইয়ে রফতানি করা হয়। মূলত এই কাপড়ের মধ্যে ছিল মহিলাদের কুর্তি। রফতানি করে JHM এক্সপোর্ট নামের এক সংস্থা। বিপুল রফতানির জন্য সরকারের কাছ থেকে সংস্থাটি ৪কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উৎসাহ ভাতা পায়। এরপর রফতানির ধরণ নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় ২০১৯ সালে তদন্ত শুরু করে ডিআরআই। ২০১৯ সালের নভেম্বের মাসে তল্লাশি চলে JHM এক্সপোর্ট সংস্থার কলকাতার অফিস সহ ১১ জায়গায়।
জানা গিয়েছে, আসলে এই JHM সংস্থার মালিক এনামুলের ৩ ভাগ্নে জাহাঙ্গির আলম, হুমায়ুন কবির এবং মেহদি হাসান। তদন্তে আরও জানা যায়, যেখানে কাপড় পাঠানো হয়েছে তার কোনও অস্তিত্বই নেই। যে ট্রাক বা ট্রেলরে চেন্নাই বন্দর পর্যন্ত মাল পৌঁছনো হয়েছে বলে নথিতে উল্লেখ, আদতে সেই বাহনেরও অস্তিত্বও নেই।
‘আল ফারাসা’ এবং ‘ব্লু আইস ট্রেডিং’ নামে দুবাইয়ের ২ স্ংস্থাকে রফতানি বলে উল্লেখ নথিতে। সেই দুই সংস্থার কেবল খাতায় কলমে অস্তিত্ব রয়েছে কিন্তু বাস্তবে নেই। আর এখানেই ইডির তদন্তকারী আধিকারিকদের সন্দেহ, আসলে কাপড় রফতানি করার নামে গরু পাচারের কালো টাকা দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে রফতানি বাবদ সরকারকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়েছে এনামুলের ভাগ্নেরা। ২০২০ সালে এনামুলের ভাগ্নে মেহদি হাসানকে গ্রেফতার করে ডিআরআই। রফতানি বাবদ সরকার থেকে পাওয়া প্রায় ৫ কোটির উৎসাহ ভাতা ফেরত দিয়ে জামিনে থাকাকালীনই দেশ ছেড়ে পালায় মেহদি হাসান।
সেই সময় মেহদি-সহ এনামুলের ৩ ভাগ্নের বিরুদ্ধে গরু পাচার মামলায় লুক আউট নোটিস জারি করেছিল ইডি। তার পরেও কার মদতে দেশ ছাড়ে তিন ভাই? ইডির দাবি, JHM ভাইদের পিছনে মদত শীর্ষ রাজনীতিবিদদের। কোন প্রভাবশালীরা আড়াল করছে গরুপাচারের কিংপিন ৩ ভাইকে?